২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালকে বলা হয়, ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ফাইনাল। অনেকে ইতিহাসের সেরা ম্যাচ বলতেও ছাড়েন না। কী ছিল না ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের সেই ফাইনালে। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে দুই দল দেখিয়েছিল দুর্দান্ত লড়াই। শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচ যায় সুপার ওভারে। তাতেও ফল না এলে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয় বাউন্ডারির সংখ্যা অনুযায়ী।
কিন্তু প্রায় ৫ বছর পর এসে সেদিনের ফাইনালের আম্পায়ার মারাই এরাসমাস জানালেন, তার এক বড় ভুলের কারণেই সেদিন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। মাঠের উত্তেজনায় সেটা টের না পেলেও, পরদিন ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। অবসর গ্রহণের পর দ্য টেলিগ্রাফে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই আম্পায়ার।
২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের তখন জয়ের জন্য ৩ বলে ৯ রান দরকার। সেই সময়েই ঘটে ফাইনালের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। বেন স্টোকস এবং আদিল রশিদ দৌড়ে দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় মার্টিন গাপটিলের ছোড়া বল স্টোকসের ব্যাটে লেগে বাউন্ডারিতে চলে যায়। মাঠে থাকা মারিয়া এরাসমাস এবং আরেক আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা ইংল্যান্ডকে ছয় রান দেন। কিন্তু ক্রিকেটের নিয়ম বলছে, সেদিন ইংল্যান্ডের প্রাপ্য ছিল ৫ রান।
গাপটিল যখন বল ছোড়েন সেই সময় স্টোকস এবং রশিদ পরস্পরকে অতিক্রম করেননি। তাই প্রান্তও বদল হয়নি দুই ব্যাটারের। নিয়ম অনুযায়ী, বল স্টোকসের ব্যাটে লাগায় ১ রান এবং ৪ রান, অর্থাৎ মোট ৫ রান পাওয়ার কথা ছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু মাঠের দুই আম্পায়ার ৬ রান দেন ইংল্যান্ডকে। পরে সেই ১ রানই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল বিশ্বকাপ ফাইনালে।
ক্রিকেটের এমসিসি আইনের ১৯.৮ এর ধারা বলছে, ‘যদি ওভারথ্রো বা ফিল্ডারের ইচ্ছাকৃত কোনো কারণে বাউন্ডারি হয়, তবে পেনাল্টির জন্য যে রান তারা নিয়েছে, তার সঙ্গে ব্যাটারদের সম্পন্ন করা চলমান রান যুক্ত হবে। যদি তারা বল ছোঁড়ার সময় একে অন্যকে অতিক্রম করে থাকে।’
সেদিনের কথা বর্ণনা করে এরাসমাস বলেন, ‘পরদিন সকালে আমি হোটেল রুমের দরজা খুলে ব্রেকফাস্টের জন্য যাচ্ছি আর কুমারও একই সময় দরজা খুলে আমাকে বলল, ‘তুমি দেখেছ আমরা যে বিশাল ভুল করে ফেলেছিলাম?’ আমি কেবল তখনই বিষয়টা জানতে পারি। কিন্তু মাঠে ওই সময়ে আমরা কেবল বলছিলাম ৬। বুঝতেই পারছেন, একে অন্যকে বলছিলাম, ৬, ৬ এটা ৬-ই হবে। বুঝতেই পারিনি তারা দুজন একে অন্যকে অতিক্রম করেনি। ওটা মাথাতেই ছিল না।’
টেলিগ্রাফের সঙ্গে আলাপকালে এরাসমাস ফাইনালের আরও এক সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। সেটা রস টেইলরকে দেয়া এলবিডব্লিউ প্রসঙ্গে, ‘ওটায় বল উচুঁ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ততক্ষণে ওরা নিজেদের রিভিউ শেষ করে ফেলেছে। পুরো সাত সপ্তাহে ওটা ছিল আমার একমাত্র ভুল। আর তারপরে আমি খুবই হতাশ হয়ে যাই, কারণ আমি যদি পুরো বিশ্বকাপে কোনো ভুলই না করতাম তবে হয়ত ফলাফল একেবারেই ভিন্ন হতো। আর অবশ্যই ওটা খেলায় কিছুটা প্রভাব ফেলেছে, কারণ সে (রস টেইলর) ছিল তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।