সিনেমায় তখন কোনোভাবেই অপশক্তিকে জয়ী দেখানো যেত না। সবসময় হিরোরই জয় হতে হবে। তারপর, ভিন্ন বর্ণের মাঝে সম্পর্ক দেখানোর অনুমোদন ছিল না। শ্বেতাঙ্গ দাসত্ব দেখানোর নীতি ছিল না। কিন্তু কালো বর্ণের ক্ষেত্রে দাস দেখালে আবার সমস্যা নেই। কারণ, তাদের তো সমাজ দাস হিসেবেই দেখতো। তাই সেই ট্যাবুকে তখন ভাঙার চেষ্টা করা হতো না। বা করতো না প্রোডাকশন কোম্পানিগুলো।
দর্শক যদি ক্ষেপে যায়, তবে ব্যবসার কী হবে- সেই জায়গা থেকে। তো সেই হেইস কোডের কারণেই তখনকার আমেরিকান সিনেমায় কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতাদের প্রধানত ছোট, অগুরুত্বপূর্ণ এবং গৎবাধা কিছু চরিত্রে নির্বাচন করা হতো। মোটামুটি পঞ্চাশের দশকের মাঝ থেকে কিংবা শেষের ভাগ থেকে এই নিয়ম ভাঙার একটা বিপ্লবী চেতনার উদ্ভব ঘটে।
আমেরিকান সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তন ঘটে সিনেমার এই দিকগুলোর। শুধু কৃষ্ণাঙ্গ চরিত্রকে প্রধান চরিত্রে নির্বাচনের বিষয় রয়েছে। উদাহরণ অডস্ এগেনস্ট টুমরো সিনেমার কথা বলা যেতে পারে। সিনেমার প্রধান তিনটি চরিত্রই সমাজের প্রান্তিক অবস্থাকে সম্মুখে আনে।
তবে তিনটি চরিত্রের মাঝে সর্বাপেক্ষা মজার চরিত্র হলো বর্ণবিদ্বেষী স্লেটার। কর্কশ ভাব এবং সৌজন্যের এক অদ্ভুত বৈপরীত্য বহন করে সে। সাথে রবার্ট রায়ানের নিখুঁত অভিনয় আরো উপভোগ্য এবং স্মরণীয় করে তোলে চরিত্রটিকে। শুধু রবার্ট রায়ানই নয়, হেনরি বেলাফন্তে, এড বেগলি, শেলি উইন্টার্স, গ্লোরিয়া গ্রাহাম- প্রত্যেকের অভিনয়শৈলী পূর্ণতা দিয়েছে চরিত্রগুলোয় এবং সতেজ করেছে সিনেমাকে।
অন-লোকেশন শ্যুটিং, বুদ্ধিদীপ্ত এবং স্টাইলিস্টিক সব সংলাপ, উদ্ভাবনী ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল যেগুলো প্রকৃতির দিক থেকে জার্মান এক্সপ্রেশনিজমের অনুপ্রেরণা বহন করে, হোটেল রুম, বার- এমন জায়গাগুলোতে ধারণকৃত দৃশ্যের আধিক্য, অপরাধ বিষয়ক গল্প এবং পৌরুষবোধে ভারী চরিত্র, সর্বোপরি ফিল্ম নোয়াহর সবকটি উপাদানকে নিখুঁত উপায়ে কার্যকর করেছে এই সিনেমা। হলিউডের জগতে এটি বিপ্লবী সিনেমা হিসেবেই পরিচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।