লাইফস্টাইল ডেস্ক : দিনের ব্যস্ততা, ক্লান্তি আর মানসিক চাপ—এই তিনটি আজকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় আপনার শরীর ও মনকে সতেজ রাখার জন্য প্রতিদিন মাত্র ২০ মিনিট হাঁটা হতে পারে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর অভ্যাস। অনেকেই ভাবেন, জিমে না গেলে বা ঘেমে না ভিজলে স্বাস্থ্য সঠিক রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু গবেষণা বলছে, নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা এতটাই ব্যাপক যে এটি আপনার মুড, শরীর এবং ঘুমের গুণগত মান পর্যন্ত পরিবর্তন করতে পারে।
Table of Contents
হাঁটার উপকারিতা: কেন প্রতিদিন ২০ মিনিট হাঁটা জরুরি?
শুধু ওজন কমানো বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ নয়, হাঁটা এমন একটি শারীরিক ব্যায়াম যা সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অবদান রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মাত্র ২০ মিনিট করে হাঁটলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মানসিক চাপ কমে যায়।
- মুড ভালো করে: হাঁটার সময় শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা আমাদের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ: হাঁটা একটি ক্যালরি বার্নিং কার্যকলাপ যা ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- ঘুমের মান উন্নত: সন্ধ্যায় হালকা হাঁটার অভ্যাস গভীর ও শান্ত ঘুমে সাহায্য করে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে হাঁটার ভূমিকা
বর্তমান সময়ে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে। সাইকোলজিক্যাল স্টাডি অনুযায়ী, হাঁটার সময় প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার কারণে আমাদের মন আরও প্রশান্ত হয়। প্রকৃতির সংস্পর্শ, সতেজ বাতাস ও সূর্যালোক মস্তিষ্কে পজিটিভ নিউরোট্রান্সমিটার গঠনে সাহায্য করে, যা আমাদের মন ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
মেডিকেল গবেষণার বাস্তব দৃষ্টান্ত
২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট হাঁটেন, তাদের মধ্যে ডিপ্রেশন ও উদ্বেগের হার ২৫% কম। বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁটা মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
কর্মজীবী মানুষের জন্য সহজ সমাধান
অফিসের ব্যস্ততার মাঝে সময় বের করা কঠিন হলেও, দুপুরের খাবারের পর বা বাসার কাছাকাছি বিকেলের সময়ে হাঁটার সময় বের করা সম্ভব। এটি আপনার কাজের মনোযোগ বাড়ায় ও মানসিক অবসাদ কমায়।
শরীরচর্চা ছাড়াও যেভাবে হাঁটা শরীরকে ঠিক রাখে
অনেকে ভাবেন শরীরচর্চা মানেই ঘাম ঝরানো বা ভারী ব্যায়াম। কিন্তু হাঁটা এমন এক ব্যায়াম যা সহজ, নিরাপদ এবং কার্যকর। এটি জয়েন্টের গতি বাড়ায়, পেশির শক্তি উন্নত করে এবং শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটি বজায় রাখে।
- হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা: নিয়মিত হাঁটা হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য হাঁটা একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি।
- হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি: হাঁটা পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
ঘুমের মান উন্নয়নে হাঁটার প্রভাব
আপনার যদি ঘুম নিয়ে সমস্যা থাকে, তাহলে হাঁটা হতে পারে সহজ সমাধান। শারীরিক ক্লান্তি এবং মানসিক প্রশান্তি দুটোই ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হাঁটার ফলে শরীরে ক্লান্তি আসে, মন শান্ত হয় এবং ঘুম সহজ হয়।
কখন হাঁটা সবচেয়ে উপকারী?
গবেষণা অনুযায়ী, সন্ধ্যার পর হালকা হাঁটা ঘুমের আগে শরীরকে প্রস্তুত করে। এতে করে ঘুম গভীর হয় এবং মধ্যরাতে বারবার জেগে ওঠার প্রবণতা কমে।
হাঁটার কিছু বাস্তব উপকারিতা যা আপনি উপেক্ষা করছেন
- দীর্ঘ সময় বসে কাজ করলে পিঠ ও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে, হাঁটা তা কমাতে সাহায্য করে।
- চোখ ও মনকে বিশ্রাম দেয়, কারণ বাইরের আলো ও পরিবেশ মনকে রিফ্রেশ করে।
- দেহের ভেতরের অর্গান যেমন লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা উন্নত হয়।
নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা যে কতটা বহুমাত্রিক, তা আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না। মাত্র ২০ মিনিট প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুললে আপনি পাবেন শারীরিক সুস্থতা, মানসিক প্রশান্তি এবং উন্নত ঘুমের নিশ্চয়তা। আজ থেকেই হাঁটার অভ্যাস শুরু করুন, আপনার মুড, শরীর ও ঘুমকে ভালো রাখুন—প্রাকৃতিকভাবে।
Motorola Edge 110 Fusion বাংলাদেশে ও ভারতে দাম বিস্তারিত স্পেসিফিকেশনসহ
জেনে রাখুন-
- প্রতিদিন হাঁটার সময় কখন সবচেয়ে উপকারী?
সন্ধ্যার সময় হালকা হাঁটা শরীর ও মনকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে। - হাঁটা কি শুধু বয়স্কদের জন্য উপকারী?
না, হাঁটা সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারী। এটি শিশু, তরুণ ও বৃদ্ধ সবার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। - হাঁটার সময় কত ক্যালরি বার্ন হয়?
জনপ্রতি ওজন ও গতি অনুযায়ী পার্থক্য হয়, তবে গড়ে ২০ মিনিটে প্রায় ৮০–১০০ ক্যালরি বার্ন হয়। - ঘরে ট্রেডমিলে হাঁটা কি একই উপকার দেয়?
হ্যাঁ, যদি নিয়মিত করা হয়। তবে বাইরের প্রাকৃতিক পরিবেশ অতিরিক্ত মানসিক প্রশান্তি দেয়। - হাঁটার জন্য সঠিক পোশাক ও জুতা কেমন হওয়া উচিত?
হালকা, আরামদায়ক পোশাক ও ভালো গ্রিপযুক্ত ওয়াকিং জুতা হাঁটার জন্য আদর্শ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।