৮ই ফাল্গুন,১৩৫৮(২১শে ফেব্রুয়ারি,১৯৫২) তার ৭১ টি বসন্ত অতিক্রম করে উপনীত হয়েছে ৮ই ফাল্গুন,১৪২৯ বঙ্গাব্দে।ভাষার জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেওয়া এই জাতি তার এই ৭১ টি বসন্তে মাতৃভাষার এই সুমহান আদর্শ কতটুকু ধারণ করলো তরুণ শিক্ষার্থীদের সেই ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রতিনিধি কাবির আব্দুল্লাহ্…
“আমার কাছে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারাটাই সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয়।”
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাদিরা ইসলাম বলেন,”আমার কাছে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারাটাই সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয়।অন্য যেকোনো ভাষাতেই কথা বলি না কেনো এতো শান্তি অনুভব হয় না যতটা বাংলা বললে মনে হয়।এটাই হয়তো মাতৃভাষার টান।তবে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষদের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে মনে হয় আমরা অন্য ভাষায় কথা বলছি।পৃথিবীর সব ভাষাতেই উপভাষা রয়েছে।আমাদেরকে উপভাষা নিয়ে কাউকে ছোট করার প্রবণতা না দেখিয়ে সবার মায়ের ভাষাকেই সম্মান করা উচিত।এতে ভাষার ভাবগাম্ভীর্য কখনো কমে না বরং কয়েকগুণ বেড়ে যায়।”
“মাতৃভাষা দিবসের আয়োজন হোক আন্তর্জাতিক।”
পরিসংখ্যান বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী লিটন চন্দ্র রায় জোর দেয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর।তিনি বলেন,”১৭ নভেম্বর,১৯৯৯ ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।২১শে ফেব্রুয়ারি শুধু বাঙালির উৎসব না হয়ে তা সমানভাবে সমাদৃত হতে হবে পুরো বিশ্বজুড়ে।উৎযাপনের মাত্রা ছড়িয়ে দিতে হবে পৃথিবীর সবার মাঝে।এর মাঝে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো বাংলা।এভাবে একটি দিন মাতৃভাষাকে ঘিরে পৃথিবীজুড়ে উৎযাপিত হলে তা পৃথিবীর সব মাতৃভাষাকেই সংরক্ষণ এবং সুরক্ষা করবে।”
“প্রভাতফেরী,বইমেলাকে ঘিরে উৎযাপন হোক আকাশছোঁয়া।”
গণিত বিভাগের ২১ ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী মো:মারুফ হাসান আক্ষেপ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বইমেলাকে কেন্দ্র করে।তিনি বলেন,”২১শে ফেব্রুয়ারি উৎযাপনের একটি বড় আবেগের নাম বইমেলা।বইমেলায় বাংলা সাহিত্যের বই বিক্রির মাধ্যমে ভাষা সম্পর্কে গভীরভাবে চর্চা করা যায়।কিন্তু অত্যন্ত হতাশার বিষয় এই যে এবার হাবিপ্রবিতে কোনো বইমেলা হচ্ছে না।বইমেলা না থাকায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি উৎযাপনে খানিকটা ভাটা পড়েছে এবার।প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারির ভোরে খালি পায়ে প্রভাতফেরীতে হেঁটে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে শ্রদ্ধাভরে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে তাদের ত্যাগের এই সুমহান আদর্শ সবাই ধারণ করার চেষ্টা করি।”
“অন্যান্য ভাষার দৌরাত্ম্যে যেনো মাতৃভাষার ভাবাবেগ ক্ষুন্ন না হয়।”
ইংরেজি বিভাগের ২০ব্যাচের শিক্ষার্থী মো:শাকিল হাসান বলেন,”বর্তমানে স্যোশাল মিডিয়ার প্রভাবে ইংরেজি ভাষার প্রয়োগ বেড়েই চলেছে।ইংরেজি শব্দ বা বাক্য বলে নিজেদের বড় ভাবার একটা কলোনিয়াল চিন্তা দিনদিন যুবসমাজের মাঝে বেড়েই চলেছে। এছাড়াও হাইকোর্টের রায় ইংরেজি,উচ্চ শিক্ষার বইও ইংরেজিতে লেখা হয়।আমাদের নিজেদের ভাষাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে।দাপ্তরিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে।এছাড়াও বেশি বেশি বাংলা সাহিত্য অধ্যয়ন করে নিজেদের মননে বাংলা ভাষার বীজ বপন করতে হবে। ভাষা শহীদদের ত্যাগকে ধারন করে ভাষার ইতিহাস,শুদ্ধ চর্চা এবং দায়িত্ববোধের জাগরণের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করতে হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।