বাংলাদেশে বেকারত্বের চিত্র আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ২০২৪ সালে দেশে বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ২০ হাজারে, যা আগের বছরের তুলনায় এক লাখ ৬০ হাজার বেশি। এর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ, যা দেশের শিক্ষিত যুবসমাজের কর্মসংস্থানের সংকটকে স্পষ্ট করে তুলছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপের (এলএফএস) চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশে, যা আগের বছর ছিল ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ। এ সময়ে প্রকৃত স্নাতক বেকারের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৮৫ হাজার। যদিও আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ২০ হাজার কম, তবুও সামগ্রিকভাবে সারাদেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে।
বিবিএস জানায়, ২০২৪ সালে জাতীয় বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশে। অন্যদিকে, মাধ্যমিকের নিচে পড়াশোনা করা বেকারের সংখ্যা গত এক বছরে এক লাখের বেশি বেড়ে ৫ লাখ ৭ হাজারে পৌঁছেছে। তাদের বেকারত্বের হার বেড়েছে ০ দশমিক ৫১ শতাংশ পয়েন্ট।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, “পরিস্থিতি মোটেও সন্তোষজনক নয়। সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রত্যাশিত হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়েনি। ব্যবসার সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিও সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। চাকরির প্রধান উৎস হচ্ছে সরকার, কিন্তু সেই সুযোগও সংখ্যায় সীমিত এবং প্রতি বছর আসে না। তাই কর্মসংস্থান বৃদ্ধির আশা করা বাস্তবসম্মত নয়।”
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ধস থেকে রক্ষায় কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেমন—মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, ব্যাংক খাত স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা এবং সীমিত মূলধন দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন। এসব পদক্ষেপের কারণে অর্থনীতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও বিনিয়োগ না বাড়ায় কর্মসংস্থান তৈরির পথ সংকুচিত হচ্ছে।
ড. ফাহমিদা মন্তব্য করেন, “হ্যাঁ, জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখানো হচ্ছে, কিন্তু সেটি বিভ্রান্তিকর। প্রবৃদ্ধির প্রধান চালক হলো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, আর সেটি গত বছর বাড়েনি। বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান কীভাবে বাড়বে?”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।