জুমবাংলা ডেস্ক : টানা ছুটিতে এ বছর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজারে। অবস্থান করছেন ৪ লাখের বেশি পর্যটক। কিন্তু সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে কোথাও রুম নেই।
ফলে হোটেলের রুম সংকট দেখিয়ে পর্যটকদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে একটি চক্র। পর্যটকদের অভিযোগ, যে রুম ২ হাজার টাকা ভাড়া ছিল; সেটি টানা ছুটিতে এখন আদায় করছে ১০ হাজার টাকার বেশি।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত পর্যটক রহিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবারের মতো হয়রানির শিকার আগে হননি তিনি। এক রাতের জন্য একটি রুম ভাড়া নিতে হয়েছে ১৩ হাজার টাকায়। যেটি গত ৩ মাস আগেও রুম ভাড়া ছিল ২ হাজার টাকা।
লাবণী পয়েন্টে আরেক পর্যটক ইলিয়াছ বলেন, জিয়া গেস্ট হাউজে একরাতে রুম ভাড়া নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা। তারপর রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু রুম ভাড়া নিয়ে ছিলাম দুই দিনের জন্য। তবে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর রুম ভাড়া দেয়। এখানে বেড়াতে এসে এত ভোগান্তি আগে কোনো দিন হয়নি। এবার হোটেল ব্যবসায়ীরা এক প্রকার গলাকাটা ব্যবসা করছে। আর ব্যবহারও খারাপ করছে।
এদিকে নানা ভোগান্তির পরও সাগরের জলরাশিতে আনন্দে মাতোয়ারা ভ্রমণপিপাসুরা। আর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আগমনে চাঙা পর্যটন ব্যবসা। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের সাগরতীর। তীরজুড়ে মানুষ আর মানুষ। নেই কোনো ভেদাভেদ। সকল বয়সের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে ৩ কিলোমিটার সাগরতীর।
বিজয় দিবসের ছুটিতে সৈকতে এসেছে ৪ লাখের বেশি পর্যটক। আর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আগমন হয় আরও লক্ষাধিক পর্যটকের। ফলে সৈকত পাড়ের হোটেল মোটেলগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না রুম। তারপরও কক্সবাজারে আগমন বাড়ছে ভ্রমণপিপাসুদের।
ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক হিরন বলেন, পরিবার নিয়ে সাগরতীরে বেশ জমা করছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাগরে কাটাব। এরপর হোটেল যাব।
কক্সবাজারে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে রাত্রিযাপন করতে পারে দেড় লক্ষাধিক পর্যটক। কিন্তু টানা ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমনে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকেই।
অভিযোগ করে মহিউদ্দিন নামের এক পর্যটক বলেন, হয়রানির তো শেষ নেই। যেখানে যায় সেখানে হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে। যেমন শামীম গেস্ট হাউজে প্রথমে রুম নেই বলে দেয়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দালাল এসে রুম দিতে পারবে বলে জানায় এবং ৫ হাজার টাকা ভাড়া চায়। এটি আসলে মেনে নেওয়া যায় না।
তবে টানা ছুটিতে পর্যটক আগমনে চাঙা পর্যটন ব্যবসা। সৈকতের হকার থেকে শুরু করে ফটোগ্রাফার, ওয়াটার বাইক ও বিচ বাইক চালকরা দারুণ খুশি।
তবে লাইফগার্ড কর্মী মো. রশীদ বলেন, রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমনে সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় ৪ লাখ পর্যটকের সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করছি মাত্র ২৬ জন কর্মী।
পর্যটকরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও রামুর বৌদ্ধবিহারে ঘুরে ছুটে যাচ্ছেন।
এদিকে পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো পর্যটক অভিযোগ করেননি। তারপরও প্রশাসন মাঠে রয়েছে। যারা পর্যটকদের হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।