জুমবাংলা ডেস্ক: ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সারাদেশের বন্যা পরিস্থিতি। ৩০ বছরের রেকর্ড ভেঙে বিপদসীমার ১৬২ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে বইছে যমুনার পানি। এর আগে গত ১৯৮৮ সালে বন্যার সময় বিপৎসীমার ১২২ সে.মি ও ২০১৭ সালে বিপদসীমার ১৩৪ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল যমুনা।
এদিকে গতকাল ১৭ জুলাই বুধবার বিপদসীমার ১৬২ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী বলেন, এই মাত্রা ১৯৮৮ সালের বন্যার সময়ের চাইতে ৪০ সেন্টিমিটার বেশি।
তাছাড়া প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে পানি। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বাড়ছে বানভাসীর সংখ্যা। বন্যার প্রবল পানির তোড়ে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, গৃহপালিত পশুপাখিসহ সহায় সম্পদ। সেই সাথে ভেসে গেছে ধান চালসহ খাদ্যসামগ্রী।
অনেকেই বসত ভিটার মায়া ছাড়তে না পেরে ঘরের ভিতর মাচা করে, কেউবা টিনের চালে আশ্রয় নিয়েছেন। খাদ্য, চিকিৎসা ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবন্দি মানুষেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এদিকে ত্রাণ পেতে অপেক্ষায় প্রহর গুণছে দুর্গত এলাকায় আটকে পড়া মানুষেরা। অনেকেই নৌকা ও ভেলায় পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটছে একটুখানি আশ্রয়ের খোঁজে। অপেক্ষাকৃত উঁচুস্থান ও সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনাতে আশ্রয় নিলেও সেখানেও পানি ঢুকে পড়ায় নতুন করে আশ্রয়ের সন্ধানে দিগি দিক ছুটছে বানভাসীরা।
এ সময় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের পূর্ব বলিয়াদহ গ্রামের ৬০ বছর বয়সী আবুল হোসেন জানান, পানির ধাক্কায় ঘরে বছরের মজুদ রাখা বেড়ের ধান, আলু-পিয়াজসহ সবকছিু ভেসে গেছে।
এদিকে দুর্গত এলাকায় বরাদ্দকৃত ত্রাণসামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় যৎ সামান্য। এই নিয়ে মুখ খুলেন ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের চেয়ারমান আব্দুস ছালাম। তিনি বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ খুবই কম। এত অল্প ত্রাণ দিয়ে ব্যাপক দুর্গত মানুষের চাহিদা মেটানো অসম্ভব।’
তাছাড়া ইউনিয়নের সকল লোকই পানিবন্দি। এত অল্প ত্রাণ দিয়ে পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কপালে জোটে দুর্গতদের গালাগালি আর মেরে দেওয়ার অপবাদ। জেলা প্রশাসনের প্রতি ত্রাণের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
এদিকে আটকেপড়া বানভাসীদের দ্রুত উদ্ধার তৎপরতার আশ্বাস দেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই ত্রাণের বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে এবং অব্যাহত থাকবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।