জুমবাংলা ডেস্ক: আজ ১২ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনেই তার পথচলা শুরু। গৌরব, ঐতিহ্য আর সাফল্যের ৪৯ বছর পেরিয়ে পদার্পণ করবে ৫০তম বর্ষে। নানা আয়োজনের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার বরণ করে নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বছরকে।
দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সকাল ১০টায় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২০ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে।
সকাল সাড়ে ১০টায় আনন্দ শোভাযাত্রা, সাড়ে ১১টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দুপুর আড়াইটায় মুক্তমঞ্চে পুতুল নাট্য, বিকাল ৫টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মূকাভিনয় এবং সন্ধ্যা ৭টায় সঙ্গীতানুষ্ঠান হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০০১ সাল থেকে এ দিনটিকে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল বায়েস ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ পালনের প্রচলন শুরু করেন। তবে এর আগে ১৯৯৬ সালের ১২ জানুয়ারি ২৫ বছর পূর্তি উৎসব পালন করেছেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উত্থান-পতনের নানা পর্ব পার করেছে। তবুও তার পথচলা থেমে থাকেনি। শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে গেছে সামনের দিকে।
পূর্ব বাংলায় একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের দাবি শুরু হয় ইংরেজ শাসনামল থেকেই। ১৯১১ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে পূর্ব বাংলার মানুষের দাবির মুখে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইংরেজ সরকার ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২১ থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কৃষি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলেও পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকার কাছাকাছি একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য গাজীপুরের সালনায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তার অব্যবহিত পরই পূর্বক্ত ভিত্তিপ্রস্তর বাতিল করে এশিয়ান হাইওয়ের পাশে সাভার এলাকায় নতুন স্থান নির্বাচন করা হয়।
১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট পূর্ব পাকিস্তান সরকার এক অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখে ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’। দেশ স্বাধীনের পর ১২ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আহসান আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন রসায়নবিদ অধ্যাপক ড. মফিজউদ্দিন আহমদ। এর আগেই প্রথম ব্যাচে ১৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ৪ জানুয়ারি অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগে ক্লাস শুরু হয়। পরবর্তীতে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট পাস করে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখা হয়।
চারটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছরে ৩৭টি বিভাগ ও তিনটি ইনস্টিটিউটে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। রয়েছে আটটি করে ছাত্র ও ছাত্রী হল। বর্তমানে শিক্ষক রয়েছে ৭১৭ জন। এর মধ্যে ছুটিতে আছে ১২০ জন। কর্মকর্তা- কর্মচারী প্রায় ২ হাজার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।