জুমবাংলা ডেস্ক : মা মারা যাওয়ার পর বাবার দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেনি ৬ বছরের শিশু আবিদ হাসান হালিম। মৃত মা শিরিনা বেগমের জায়গায় সৎ মাকে মেনে নিতে না পারায় এক সময় বুক ভরা অভিমান নিয়ে বাড়ি থেকে অজানার পথে পা বাড়ায় ৬ বছরের শিশুটি। ২০১৪ সালে হারিয়ে যাওয়া শিশুটি ৭ বছর পর ১৪ বছরের কিশোর আবিদ হাসানকে ফিরে পেলো তার স্বজনরা।
গফরগাঁওয়ের রাওনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ শাহাবুল আলম ও হালিমের ভাই মনির হোসেন হালিমকে নিয়ে রবিবার (২ মে) বিকালে শিশুটির বাড়িতে উপস্থিত হলে হালিমকে পরম আদরে বুকে টেনে নেন স্বজনরা।
জানা গেছে, ৬ বছরের শিশু হারিয়ে যাওয়ার পর তার পিতা আউয়াল মিয়াসহ পরিবারের লোকজন বহুস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পায়নি আবিদ হাসান হালিমের। কিছুদিন পর হালিমের পিতা আওয়াল মিয়াও মারা যান। তার ভাই মনির হোসেনও শিশু হালিমকে খুঁজে পাননি । কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে জনৈক এক ব্যক্তি হালিমকে পেয়ে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চৌধুরীবাড়ি এলাকার সমাজসেবা অধিদফতরের সরকারি আশ্রয়ন কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন। এতিম শিশু হিসেবে এই আশ্রয়ন কেন্দ্রেই ৭ বছর ধরে সরকারি কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে আশ্রিত ছিল হালিম। নিজের নাম ঠিকানা আবছা আবছা মনে পড়তো তার কিন্ত নাম ঠিকানা বলার মতো কাউকে খুঁজে পেতো না।
অবশেষে আশ্রয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা তফাজ্জল গোলন্দাজ কিশোর বয়সী হালিমের পরিচয় জানতে রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহাবুল আলমের সাথে যোগাযোগ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুল আলম হালিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তার পরিচয় নিশ্চিত করেন। রবিবার সকালে ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহাবুল আলমহালিমের ভাই মনিরকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চৌধুরীবাড়ি এলাকার সমাজসেবা অধিদফতরের সরকারি আশ্রয়ন কেন্দ্রে উপস্থিত হন। সকল অফিসিয়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সিদ্ধিরগঞ্জ সমাজসেবা অধিদফতরের সরকারি আশ্রয়ন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মোছা: কামরুন্নাহার আরজুর মাধ্যমে হালিমকে তুলে দেওয়া হয় তার ভাই মনিরের হাতে।
রবিবার বিকালে চেয়ারম্যান মো: শাহাবুল আলম ধোপাঘাট গ্রামের হালিমদের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ৭ বছর পর আবিদ হাসান হালিমকে তুলে দেন তার স্বজনদের হাতে। এ সময় ১৪ বছরের কিশোর আবিদ হাসান হালিম ও তার পরিবারের লোকজন আনন্দে আত্মহারা হয়।
আবিদ হাসান হালিম জানায়, সে তার তার পরিবারের কাছে আসতে পেরে অনেক খুশি। সবসময়ই পরিবারের কাছে থাকতে চায় সে।
স্থানীয় রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহাবুল আলম বলেন, হারিয়ে যাওয়া সকল শিশু যাদের পরিচয় এক সময় হালিমের ‘পথশিশু’ হয় তারা সবাই তাদের পরিবারকে ফিরে পাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।