পাবনা প্রতিনিধি: ৮০ লাখ টাকায় নির্মাণকাজ শেষের দেড় মাসের মাথায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সেতুর সংযোগ সড়কে। গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ধসে গেছে সেতুর দুইপাশের সংযোগ সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা। দ্রুত মেরামত করা না হলে বৃষ্টিতে যেকোনো সময় একেবারে ভেঙে চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের মাঝগ্রামে চিকনাই নদীর শাখার উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরজমিনে দেখা যায়, মাঝগ্রামে চিকনাই নদীর শাখার উপর পুরাতন সেতু ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৮০ লাখ ২১ হাজার ৭১১ টাকা ব্যয়ে মুলগ্রাম ইউনিয়নের মাঝগ্রামে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। কাজটির মুল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পাবনার সুজানগরের মেসার্স তীর্থ করবি এন্টারপ্রাইজ। পরে তার কাছ সাবকন্ট্রাক্টে কাজটি সম্পন্ন করেছেন চাটমোহরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফায়েত এন্টারপ্রাইজ।
সেতুটির দুই পাশের মাজগ্রাম, রতনপুর, কুবিরদিয়ার, দাঁথিয়া কয়রাপাড়া, বাহাদুরপুর, মথুরাপুর, আনকুটিয়া, অমৃতকুন্ডা সহ অন্তত দশটি গ্রামের মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। আশপাশে রয়েছে একটি দাখিল মাদ্রাসা, একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, কবরস্থান, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, অমৃতকুন্ডা হাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
মাঝগ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম দুলু বলেন, সরকার জনগনের সুবিধার জন্য কাজ করে। কিন্তু ঠিকাদার কিভাবে কাজ করলো আমরা বুঝলাম না। ৮০ লাখ টাকায় সেতু করল কিন্তু সংযোগ সড়কটা ঠিকমতো করল না। দেড় মাসের মধ্যে একটু বৃষ্টিতেই ভেঙে যাচ্ছে। আর একটু বৃষ্টি হলে তো চলাচল করা যাবে না।
স্থানীয় ময়েজ মোল্লা বলেন, গত ১৭ মে কাজ শেষ হলে চলাচল শুরু হয়। কিন্তু জুলাই মাসেই দুই পাশের সংযোগ রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। ইট খুলে নদীতে পড়ে যাচ্ছে।
গিয়াস উদ্দিন, সাবান আলী বলেন, এদিক দিয়ে স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। অমৃতকুন্ডা হাটে যায় মানুষ। সেতুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। কিন্তু সেতু হলেও সংযোগ সড়কটার কাজ দায়সারাভাবে করা হয়েছে। এজন্য কিছুদিনের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামীম এহসান বলেন, কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি সরে গিয়ে কিছুটা ক্ষতিসাধন হয়েছে। তবে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমি ছুটিতে আছি। ফিরে এসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাফায়েত এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলাম নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃষ্টিতে সংযোগ সড়কের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অনান্যরা সেতু পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল বলেন, সরজমিনে বিষয়টি আমি দেখেছি। ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ধসে যাওয়া স্থান মেরামতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।