জুমবাংলা ডেস্ক: অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা চালান দুর্ঘটনায় পা হারানো আব্দুর রশিদ। অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে চার সদস্যের সংসার।
গতকাল বৃহস্পতিবার মসজিদের সামনে অটোরিকশাটি রেখে আসরের নামাজ আদায় করতে যান আব্দুর রশিদ। নামাজ শেষে এসে অটোরিকশা দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গা খোঁজ করেন। এরপরও না পেয়ে কান্না করতে দেখা যায় তাকে।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তার পুকুরপাড় জামে মসজিদের সামনে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটে।
শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুর রশিদ সুনামগঞ্জের ছাতক থানার পুরান নোয়াকোট গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে। তিনি তিন মাস আগে পরিবার নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর শহরের তাজুর বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন।
আব্দুর রশিদ জানান, ছোটবেলায় নৌকায় করে নানার বাড়ি যাচ্ছিলেন। ওই সময় নৌকার ইঞ্জিনের সঙ্গে লেগে বাম পা হারান। সব সময় মানুষের কাছে ছোট হয়ে থাকতে হয়েছে। বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকান দেন, পাথর ভাঙার শ্রমিকরা মূলত তার কাস্টমার ছিল। এক সময় পাথর ভাঙা বন্ধ হয়ে বিপাকে পড়তে হয়।
পরে এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে এসে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ৯০ হাজার টাকায় অটোরিকশা কেনেন। অটোরিকশা কেনার মাস তিনেকের মধ্যে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেলে কর্মহীন হয়ে পড়েন তিনি।
স্থানীয়দের পরামর্শে সাপ্তাহিক ১ হাজার ৫০০ টাকা কিস্তিতে আশা এনজিও থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোরিকশার ব্যাটারি কিনে তা সচল করেন। অটোরিকশা চালাতে থাকেন।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমি সারা দিন অটোরিকশা চালালেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। অটোরিকশা চালাতে চালাতে যখন নামাজের সময় হয় আমি আশপাশের মসজিদে নামাজ আদায় করি। বৃহস্পতিবারও মসজিদের সামনে অটোরিকশা রেখে নামাজে গিয়েছিলাম। চার রাকাত নামাজ শেষ করে এসে দেখি অটোরিকশাটি নেই। এ রিকশাটিই ছিল আমার আয়ের প্রধান উৎস।’
একই মসজিদের নামাজ আদায় করছিলেন বুলবুল হাসান। তিনি জানান, ‘প্রায়ই তিনি এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন। আমরা একসঙ্গে নামাজ আদায় করি। নামাজে এসে অটোরিকশা হারাতে হবে, এটা মানা খুব কষ্টকর। বিত্তবানদের তার পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।