জুমবাংলা ডেস্ক: আমতলীতে একটি মাধ্যমিক স্কুলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ও আমতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং আমতলী আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে বিধি বর্হিভুতভাবে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক মোসা. সেলুনা বেগম।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষকের জামাতা মিজানুর রহমান।
লিখিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি আমতলী উপজেলার কাউনিয়া ইব্রাহীম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আমার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার ৮০ দিন আগে পূর্বের ভোটার তালিকাসহ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। অভিভাবক পদে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মজিবর রহমানের পক্ষে পাচঁজন অভিভাবক সদস্য ও ফারুক গাজীর পক্ষে পাচঁজন অভিভাবক সদস্য মনোনয়ন পত্র জমা দেয়।
মজিবর রহমানের পক্ষের দুইজন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেয়। মজিবর রহমান সভাপতি হতে পারবে না এমন আশঙ্কায় তার পক্ষের হানিফ মীরকে দিয়ে আমতলী সহকারী জজ আদালতে নির্বাচন স্থগিত চেয়ে একটি মামলা করান। আদালত গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়।
প্রধান শিক্ষক বলেন, কমিটি না থাকায় সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান আমাকে চতুর্থ শ্রেণির দুইজন কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয়। আমি তাকে বলেছি কমিটি না থাকলে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এতে মজিবর রহমান আমার উপর রুষ্ট হন। আমি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করি।
গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর কমিটির মেয়াদ শেষ হলে এ বছর ২৬ আগষ্ট বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আমাকে এডহক কমিটি করার অনুমতি দেয়। আমি মজিবর রহমানকে অবহিত করলে তিনি ৫ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব অবহেলা, দুর্নীতি, অদক্ষতা ও সভাপতির ন্যায় সংগত আদেশ অমান্য করার কারণ দেখিয়ে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মজিবর রহমানের ভায়রার ছেলের স্ত্রী শাহানাজ পারভিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, আমতলীর সহকারী জজ আদালত ২৩ সেপ্টেম্বর একটি আদেশ দিয়েছেন। ওই আদেশে বলা হয়েছে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা করে আদালতে দাখিল করতে হবে। একই সঙ্গে পূর্ববর্তী কমিটি দায়িত্ব পালন করার সুযোগ রয়েছে। এই আদেশ প্রাপ্তির আগেই ৫ সেপ্টেম্বর আমাকে বেআইনীভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন সাবেক সভাপতি।
তিনি আরও বলেন, ২৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে চারটার সময় সাবেক সভাপতি ওই স্কুলে ঢুকে দুইটি স্টিল আলমারির তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায়। এ ছাড়া মজিবর রহমান তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানী করছেন।
এ ব্যাপারে মজিবর রহমান সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি করার কারণে তাকে কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধান শিক্ষক স্কুলের সকল দলিল গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সরিয়েছে। তার মত দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের চাকরী থাকা উচিৎ নয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। ১৫ আগষ্টসহ জাতীয় দিবস গুলো পালন করেন না। ছুটি ব্যতীত দিনের পর দিন বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহানাজ পারভীন বাদি হয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০ অক্টোবর আমতলী থানায় একটি অর্থ আত্মসাতের মামলা করেছেন। শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। তাকে দুইবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পরও কোন জবাব দেননি তিনি।
কমিটির মেয়াদ না থাকায় কিভাবে একজন প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তাকে বিধি মোতাবেক বহিস্কার করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



