জুমবাংলা ডেস্ক : ২৩ দিনের এক নবজাতককে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় তার বাবা বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৪ নম্বর গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালাগাজী চৌধুরীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে ওই নবজাতকের বাবা নূর আহম্মদের দাবি, সন্তান মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছে না। তাকে গুঁড়োদুধ কিনে খাওয়ানোর সামর্থ্যও তার নেই। তাই নিঃসন্তান এক ব্যক্তির কাছে ছেলেকে দত্তক দিয়েছেন।
গ্রামবাসী জানায়, সাত বছর আগে পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শামিমা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় নূর আহম্মদের। এই দম্পতির নঈম (৫) ও সমিহা (৩) নামে দুই সন্তান রয়েছে। গত ১১ মার্চ ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন শামিমা আক্তার। তার নাম রাখা হয় মোজাহেদ। ভরণপোষণের সামর্থ্য নেই এমন অজুহাত দেখিয়ে গতকাল সকালে নবজাতক মোজাহেদকে পাশ্ববর্তী রাউজানের গহিরা এলাকার মো. ইদ্রিস নামে এক নিঃসন্তান ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন নূর আহম্মদ। ২৩ দিনের সন্তানকে বিক্রি না করতে পাড়া-প্রতিবেশী ও স্বজনরা নিষেধ করেন তাকে। কিন্তু কারও কথাই শোনেননি নূর আহম্মদ।
তবে নবজাতক সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নূর আহম্মদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এতগুলো সন্তানের ভরণপোষণ চালানো আমার পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মোজাহেদ (নবজাতক) তার মার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় দুধও পাচ্ছে না। তাকে গুঁড়োদুধ কিনে খাওয়ানোর সামর্থ্যও আমার নেই। তাই তাকে ইদ্রিস নামে এক নিঃসন্তান ব্যক্তির কাছে দত্তক হিসেবে দিয়েছি। খুশি হয়ে ইদ্রিস আমাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছে।’
এদিকে পাঁচ হাজার টাকায় নিজের নবজাতক সন্তানকে বিক্রির ঘটনা জানতে পেরে গুমানমর্দ্দন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান গতকাল বিকালে নূর আহম্মদকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে পাঠান। একইসঙ্গে নবজাতকটিকে ‘দত্তক গ্রহণকারী’ মো. ইদ্রিসকেও ডেকে পাঠান। চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করব। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমীন গতকাল রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২৩ দিনের ছেলেকে তার নিজের বাবা বিক্রি করে দিয়েছেন বলে লোকমারফত শুনেছি। ওই শিশুটির মা-বাবাকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে উপজেলা সদরে আনা হচ্ছে। বাচ্চাটিকেও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। শিশুটিকে উদ্ধারের পর সামাজিকভাবে মীমাংসা করব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।