জুমবাংলা ডেস্ক: সুজন কালিন্দী। ২৫ বছর বয়সের এই যুবক কাজ করতেন বিরুলিয়ার আলফা ড্রিংকিং ওয়াটার ফ্যাক্টরীতে। রিকশা ভ্যানে বিভিন্ন দোকানে পানির জার ডেলিভারি দিতেন। পল্লবী থানাধীন মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনের এ ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ির মেসে থাকতেন তিনি। দিন দশেক আগে সুজন করোনার উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাসায় থেকে তিনি চিকিত্সা নেন। রবিবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে আলফা ড্রিংকিং ওয়াটার ফ্যাক্টরীর মালিক সাইফুল ইসলামের কাছে খবর দেওয়া হয়। তিনি একটি এ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে দেন সুজনকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। রবিবার রাত ১ টার দিকে সুজনকে জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এরপর সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৮ ঘন্টা লাশসহ এ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালের সামনে দাাঁড়িয়ে থাকে।
জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের আজকের সংখ্যায় প্রকাশিত সাংবাদিক জামিউল আহসান সিপু’র করা একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাতেই ফ্যাক্টরির মালিক মোবাইল ফোনে ছেলের মৃত্যুর খবর দেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা বাগানে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত সুজনের বাবার কাছে। লাশ সত্কারের জন্য ঢাকায় আসতে বলেন।
কিন্তু তার পিতা বকুল জানান, তারা লাশ নিবেন না। লাশ দেখতে ঢাকায়ও যাবেন না। আর করোনার এই সময়ে লাশ ঢাকা থেকে আনতে অন্তত ১০ হাজার টাকা লাগবে। এই টাকা তারা কোথায় পাবেন? তাই সুজনের বাবা বলে দেন, ছেলের লাশ আপনারা যা খুশি করেন।
চিন্তায় পড়েন সাইফুল ইসলাম। সকালে তিনি চলে এলেন হূদরোগ ইনস্টিটিউটে। হাসপাতালের মৃত্যু সনদে লেখা ছিল মো. সুজন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সুজনের এই নাম দেখে কেউই লাশের সত্কার করতে চাচ্ছে না। পরে জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে সুজনের প্রকৃত নাম সুজন কালন্দী দিয়ে মৃত্যু সনদ বের করেন সাইফুল। পুলিশের কাছে খবর দেন। কারণ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়া লাশ সত্কার করা যাবে না।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, সুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর পুলিশের একটি টিম তার মেসে গিয়ে সন্ধান চালায়। তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে বিষয়টি জানানো হয়। এসব কাজ করতে করতে সোমবার বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। ততক্ষণে লাশ সত্কার করতে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন থেকে একটি টিম চলে আসে। এরপর লাশ বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটি রওনা দেয় পোস্তগোলা শশ্মানঘাটের দিকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।