টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে বিশ্বরেকর্ড গড়া একটি ম্যাচ খেলে ফেলল পাঞ্জাব কিংস ও কলকাতা নাইট রাইডার্স। ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে স্বাগতিক কলকাতার দেওয়া ২৬২ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে পাঞ্জাব এই কীর্তি গড়ে। নানা কারণে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে ম্যাচটি। কারণ পাঞ্জাব-কলকাতার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাঝেই যে হয়ে গেল রেকর্ডের ছড়াছড়ি।
আইপিএলের ১৭তম আসরের ৪২তম ম্যাচে গতকাল (শনিবার) মুখোমুখি হয় দু’দল। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার ফিল সল্ট আর সুনীল নারিনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভর করে ৬ উইকেটে ২৬১ রানের বড় পুঁজি গড়েছিল কলকাতা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে জনি বেয়ারেস্টোর দুর্দান্ত শতকে ভর করে ৮ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাঞ্জাব। ৪৮ বলে ৮ চার ও ৯ ছক্কায় ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন বেয়ারেস্টো। এছাড়া ২৮ বলে ৬৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন শশাঙ্ক সিং।
ম্যাচটিতে কী কী রেকর্ড হলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক :
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড
অতীতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০২৩ সালে সেঞ্চুরিয়নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রোটিয়ারা ২৫৯ রান তাড়া করে জিতেছিল। যা এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রান চেজের রেকর্ড। এই তালিকার তিন নম্বরে রয়েছে মিডলসেক্স। টি-টোয়েন্টি ব্লাসে আরেক ইংলিশ ক্লাব সারের বিপক্ষে ২০২৩ সালে ২৫৩ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা।
এতদিন আইপিএলে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল রাজস্থান রয়্যালসের। চলতি আসরেই তারা কলকাতার নেওয়া ২২৪ রান পেরিয়ে ওই রেকর্ড গড়ে। তবে এর আগে ২০২০ আইপিএলে সমান রান তাড়ায় পাঞ্জাবকে হারিয়েছিল রাজস্থান।
ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলা দুই দলের প্রতিনিধি সুনীল নারিন ও জনি বেয়ারস্টো। শেষ পর্যন্ত লাল শিবিরের জয় হয়েছে
টি-টোয়েন্টির এক ম্যাচে সর্বাধিক ছয়
এই তালিকাজুড়েই আইপিএলের দাপট। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সর্বোচ্চ ছয় হাঁকানোয় প্রথম তিন স্থানেই রয়েছে আইপিএলের তিনটি ম্যাচ। যার সবকটিই হয়েছে চলতি আসরে। গতকাল কলকাতা-পাঞ্জাব ম্যাচে সর্বাধিক ৪২টি ছয় রয়েছে। যা যেকোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছয়ের রেকর্ড। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে হায়দরাবাদ-মুম্বাই এবং হায়দরাবাদ-বেঙ্গালুরু ম্যাচ। ম্যাচ দুটিতেই ৩৮টি করে ছয় হয়েছে। ৩৭টি ছয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে বল্খ লেজেন্ডস এবং কাবুল জোয়াননের ম্যাচ।
এছাড়া এককভাবে গতকাল পাঞ্জাব ২৪টি ছয় হাঁকিয়েছে, যা টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে হাংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে টি-টোয়েন্টির এক ইনিংসে এককভাবে সর্বোচ্চ ২৬টি ছয়ের রেকর্ড গড়েছিল নেপাল, প্রতিপক্ষ মঙ্গোলিয়া। অন্যদিকে, আইপিএলে এতদিন এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ২২টি ছয়ের রেকর্ড ছিল হায়দরাবাদের।
আইপিএলের কোনো ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান
এ বছর হায়দরাবাদ বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫৪৯ রান হয়েছিল। তার আগে হায়দরাবাদ বনাম মুম্বাই ম্যাচে হয়েছিল ৫২৩ রান। শুক্রবার ইডেনে সেই একই রান হল। কলকাতা এবং পাঞ্জাবের ইনিংস মিলিয়ে উঠল ৫২৩ রান। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে মোট তিন ম্যাচে পাঁচশ’র অধিক রান দেখা গেল, এটিও প্রথমবারের মতো। তার আগে ২০১০ সালে চেন্নাই বনাম রাজস্থানের ম্যাচে ৪৬৯ রান ১৩ বছর সবার শীর্ষে ছিল।
এছাড়া চলতি আইপিএলে এখন পর্যন্ত এক ইনিংসে ৭ বার ২৫০ রানের বেশি রান উঠেছে। কোনো সিঙ্গেল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে যা সর্বোচ্চ। অথচ আইপিএলে গত ১৬ আসরে কেবল দু’বার ২৫০–এর বেশি রান দেখা গিয়েছিল। ইংল্যান্ডের টুর্নামেন্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে ২০২২ ও ২০২৩ মৌসুমে তিনটি ২৫০+ স্কোর ওঠে।
আরও কিছু রেকর্ড :
গতকালের ম্যাচে দু’দল মিলে বাউন্ডারিতে ৪০০ রান (কলকাতা ১৯৬, পাঞ্জাব ২০৪) করেছে। যা টি-টোয়েন্টিতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। এর আগে সমান রান এসেছিল চলতি আসরেরই বেঙ্গালুরু-হায়দরাবাদ ম্যাচে।
কলকাতা-পাঞ্জাব ম্যাচটিতে আইপিএলের সবচেয়ে বাজে ইকোনমি রেট ছিল বোলারদের। যেখানে পেসাররা ২৩.৪ ওভারে ৩৫৯ রান খরচ করেছেন। কেবল ১৫–এর নিচে রান দিয়েছেন আশদীপ সিং (ন্যূনতম এক ওভার করা বোলারদের মধ্যে)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।