জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ায় করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক নারীর নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও বাড়ি ফেরার পর তাকে জানানো হয় তিনি করোনা পজিটিভ। ঘটনাটি বগুড়ায় বেশ চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নারীর প্রথম নমুনা পরীক্ষা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে যেটিতে তার ফলাফল নেগেটিভ আসে এবং দ্বিতীয় পরীক্ষা হয় বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলজের পিসিআর ল্যাবে যেখানে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
আইসোলেশন ইউনিটে করোনা পজিটিভ অন্য রোগীদের ব্যবহৃত বাথরুম ব্যবহারের কারণেই হয়তো তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশ্য করোনা পজিটিভ হলেও কোনো উপসর্গ না থাকা এবং ছয় মাস বয়সী এক সন্তান থাকার কারণে সেই নারীকে নতুন করে আর আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয়নি। বরং বাড়িতেই পৃথক কক্ষে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ২৫ বছরের ওই নারীর আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট ছিল। পাশাপাশি তার স্তনেও ব্যথা ছিল। কদিন আগে ব্যথা উপশমের জন্য তিনি পেইনকিলার ওষুধ সেবন করেন। ফলে তার শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায়। তখন এলাকার লোকজন তাকে করোনা রোগী হিসেবে সন্দেহ করা শুরু করেন। এতে বাধ্য হয়েই তার স্বামী ছয় মাসের শিশুসহ ওই নারীকে ১৭ এপ্রিল রাতে বগুড়া করোনা আইসোলেশন ইউনিট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আনেন।
ডা. শফিক আমিন কাজল আরও জানান, ১৮ এপ্রিল ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং পরীক্ষার জন্য ১৯ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। তবে তিন দিনেও তার ফলাফল না আসায় ২২ এপ্রিল আবারও তার নমুনা সংগ্রহ করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানে হয়। অবশ্য ওইদিন রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো সেই নারীর নমুনার রেজাল্ট আসে। যেখানে তাকে নেগেটিভ উল্লেখ করা হয় অর্থাৎ তিনি করোনায় আক্রান্ত নন। যেহেতু ওই নারীর ছয় মাসের শিশু রয়েছে যাকে তার কাছ থেকে আলাদা রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ওই কারণে পরদিন ২৩ এপ্রিল দুপুরে তাকে ছুটি দেওয়া হয় এবং তিনি বাড়ি চলে যান। কিন্তু সেই রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ থেকে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠানো রিপোর্টে জানানো হয় শিবগঞ্জের সেই নারী করোনা পজিটিভ।
ডা. কাজল বলেন, ‘যেহেতু তার কোনো উপসর্গ নেই আর তাছাড়া তার ছয় মাসের শিশু সন্তান রয়েছে সে কারণে আমরা তাকে আর আইসোলেশনে নেইনি। যেহেতু তার বাড়িতে আলাদা থাকার মতো ঘর রয়েছে সে কারণে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও ডা. কাজল আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালে করোনা পজিটিভ রোগীদের ব্যবহৃত বাথরুম থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপতালে করোনা পজিটিভ ও সন্দেহভাজনদের জন্য আলাদা রাখা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো করোনা পজিটিভ রোগীরা সন্দেহভাজনদের বাথরুমে ঢুকে পড়েন। এমনকি সুযোগ পেলে তারা নার্সদের বাথরুমও ব্যবহার করেন। এটা থেকে আমরা ধারণা করছি, ওই নারী যে বাথরুম ব্যবহার করছিলেন সেটি করোনা পজিটিভ কোনো রোগীও হয়তো ব্যবহার করেছিলেন। আর সেখান থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন।’
বিষয়টি নিয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির, বলেন, ‘এ ঘটনায় তিন বাড়ি ও একটি ফার্মেসিকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।