আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দীর্ঘ প্রত্যাশিত বৈঠক আজ হচ্ছে। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন বলে রুশ সচিবালয় ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। সাংহাই কো অপারেশন অরগানাইজেশনের সম্মেলনের ফাঁকে তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও বৈঠকের কথা রয়েছে।
গতকাল বুধবার থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কাজাখস্তানে তিন দিনের সফর শুরু করছেন। করোনা শুরুর পর থেকে শির এটিই প্রথম বিদেশ সফর। আজ বৃহস্পতিবার তিনি উজবেকিস্তানের সমরকন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সম্মেলন ১৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে বিবিসি। চীন ও রাশিয়া দীর্ঘদিন থেকেই এসসিও পশ্চিমা বহুজাতিক গোষ্ঠীর একটি বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে আসছে।
ক্রেমলিনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মুখপাত্র ইউরি উশাকভ বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক এবং ইরানসহ অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গেও দেখা করবেন। তবে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠকটি ‘বিশেষ’। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে শীতকালীন অলিম্পিকসে বৈঠক করেছিলেন পুতিন-শি। এবার দ্বিতীয় বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন পুতিন।
ইউক্রেনে ক্রমেই পরাজয়ের মুখে পড়ছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেন বাহিনী দাবি করেছে, তারা ৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা রাশিয়ার বাহিনীর কাছ থেকে পুনর্দখল করেছে। তারা রাশিয়া পুরোপুরিভাবে ইউক্রন হটানোর পরিকল্পনা করছে। ইউক্রেনে পরাজয় নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এই অবস্থায় চীন রাশিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। রাশিয়ার জ্বালানি কিনে রাশিয়াকে আর্থিক সমর্থনও দিয়ে যাচ্ছে চীন। এছাড়া রাশিয়ায় গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করছে চীন। তবে পুতিন আগের চেয়ে আরো বেশি চীনা প্রেসিডেন্টের সমর্থন চান। আবার তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে পশ্চিমের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হলে রাশিয়া চীনকে সমর্থন জানায়। এই অবস্থায় উজবেকিস্তানে বৈঠক করে চীন ও রাশিয়ার নেতা পশ্চিমের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সংকেত দিতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রুশ প্রেসিডেন্টের দাপ্তরিক ভবন ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ ও অন্যান্য ‘আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়’ নিয়ে আলোচনা করবেন তারা। পশ্চিমা বিশ্বের কাছে এই বৈঠক একটি ‘বিকল্প’ তুলে ধরবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাইওয়ানের ইনস্টিটটিউট ফর ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি রিসার্চের মধ্য এশিয়া বিশেষজ্ঞ চিয়েন-ইয়ু শিহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, পশ্চিমের সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার উত্তেজনা দেশ দুটির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াবে। কিরঘিজস্তানের থিংক ট্যাংক ওএসসিই একাডেমির সিনিয়র রিসার্চার নিভা ইয়াও বলছেন, পশ্চিমের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক অর্ডারে পরিবর্তন আনতে চায় রাশিয়া ও চীন। সে কারণে দেশ দুটির মধ্যে জোট তৈরি হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে চীন একটি বিষয় অনুধাবন করতে পারছে না বলে মনে করেন ইয়াও। তিনি বলেন, ‘চীন যেটা বুঝছে না সেটা হচ্ছে রাশিয়ার লক্ষ্য পশ্চিমকে টেনে নামানো নয়, বরং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ফিরিয়ে আনা।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।