রাজধানীর কলাবাগানে বন্ধুর বাসায় ‘ধর্ষণের পর হত্যা’র শিকার ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী আনুশকা নুর আমিনের ডি-অক্সি-রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) প্রতিবেদনে ঘটনার দিন তার সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি। ওই প্রতিবেদনে আনুশকার সঙ্গে কেবল দিহানেরই শারীরিক সম্পর্কে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব থেকে আনুশকার ডিএনএ প্রতিবেদন প্রস্তুত করে কয়েকদিন আগে কলাবাগান থানা পুলিশকে দেয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই স্কুলছাত্রী আনুশকার মৃত্যু হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই এখন কলাবাগান থানা পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে জমা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এদিকে, প্রতিবেদনে ঘটনাটির সঙ্গে কেবল দিহানের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আনুশকার বাবা। প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা অভিহিত করে এটি প্রত্যাখ্যান করবেন বলে জানান তিনি। আনুশকার পরিবার শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিল, দিহানের সঙ্গে তার বন্ধুরাও সেদিন উপস্থিত ছিল দিহানের বাসায়। তারা সবাই মিলেই আনুশকাকে হত্যা করেছে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) আনুশকার পরিবার, কলাবাগান থানা পুলিশ, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে, সিআইডির শীর্ষ পযায়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অভিযুক্তের (দিহানের) বাসায় মেয়েটির সঙ্গে অন্য কেউ ছিল না। ডিএনএ প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে দিহান ছাড়া কারও স্পর্শের আলামতও পাওয়া যায়নি। তবে তাদের দুজনের সম্মতিতেই অস্বাভাবিক এক ধরনের সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল। সেই সম্পর্কের সময় মেয়েটার শরীরে বাহ্যিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। আর সেটার আঘাতেই শরীরের ভেতরের রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় মেয়েটির।’
তবে সিআইডির এই ফরেনসিক প্রতিবেদন মিথ্যা বলে দাবি করেছেন আনুশকার বাবা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলার শুরুতে দ্রুত সব কিছু হচ্ছিল। সবার সাহায্যও পাচ্ছিলাম। তবে ধীরে ধীরে মামলার তদন্তের গতি কমে যায়। সিআইডি ডিএনএ করার নামে দুই মাস অপেক্ষা করায়। তখনই বুঝেছি। ছেলেটাকে বাঁচিয়ে দেয়ার জন্য এতসব আয়োজন হচ্ছে। আমি এই প্রতিবেদন বিশ্বাস করি না। আমরা এই মামলার তদন্ত নিয়ে অনেকটাই হতাশ।’
এ ব্যাপারে ডিএমপির কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র বলেন, ‘আনুশকার মরদেহের ডিএনএ প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো আমাদের হাতে আসেনি। এই প্রতিবেদনগুলো ছাড়া মামলার অন্যান্য অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে এলে তদন্ত যাতে সঠিক হয় এ জন্য প্রাপ্ত সব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।