আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র, তার স্ত্রী এবং পার্লামেন্টের স্পিকারকে খুন করতে একজন গুপ্তঘাতক ঠিক করে রেখেছেন। এবং তাকে হত্যা করা হলে এদের কেউ বাঁচবে না বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার (২৩ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও সিবিএসের প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
ফিলিপাইনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দুই রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত এটি।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র ফিলিপাইনের সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের ছেলে। ২০ বছর ক্ষমতা দখল করে রাখা ফার্দিনান্দকে ১৯৮৬ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করা হয়। এদিকে সারা দুতার্তে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের মেয়ে। মার্কোস জুনিয়র ক্ষমতায় আসার আগে রদ্রিগোর হাতেই ছিল দেশটির শাসনভার।
রদ্রিগো দেশটির সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচিত। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তদন্ত চলছে।
ফিলিপাইনে ২০২২ সালের নির্বাচনের আগে মার্কোস ও দুতার্তের দল মিলে একটি জোট তৈরি করে, যার নাম দেওয়া হয় ‘ইউনিটিম’।
এই জোট ক্ষমতায় আসলে যথাক্রমে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ দখল করেন মার্কোস জুনিয়র ও সারা দুতার্তে। কিন্তু এই দুই শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও তাদের সমর্থকরা প্রথম দিন থেকেই কোন্দলে জড়িয়ে আছে।
সারা গত জুনে ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করে ‘ইউনিটিম’ জোট ভেঙে দিয়েছেন। তিনি একাধিকবার প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র ও তার মামাতো ভাই স্পিকার মার্টিন রোমুয়ালদেজকে ‘অযোগ্য’ ও ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
স্পিকার রোমুয়ালদেজ ভাইস প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বাজেট প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি সারার চিফ অব স্টাফ জুলেখা লোপেজকে আটক করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর জবাবেই এমন ক্ষুরধার বক্তব্য দিয়েছেন সারা।
শনিবার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া এক বক্তব্যে সারা বলেন, আমি একজন লোক ঠিক করে রেখেছি। বলেছি, আমি মারা গেলে বিবিএম (মার্কোস), (ফার্স্ট লেডি) লিজা আরানেটা এবং (স্পিকার) মার্টিন রোমুয়ালদেজকে মেরে ফেলবে। একে রসিকতা ভাববেন না আবার।’
গালাগাল সম্বলিত এই বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলে দিয়েছি, এদের সবাইকে খুন করার আগ পর্যন্ত থামবে না।’
এরপর প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই বক্তব্যের পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্টের জীবনের ওপর যেকোনো হুমকিই গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যখন এরকম প্রকাশ্যে, স্পষ্ট ভাষায় হুমকি দেওয়া হয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।