জুমবাংলা ডেস্ক : এবার এইচএসসি পাশ করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল মেহেদী। কিন্তু টিকেনি। তাই সাত কলেজের যে কোন একটিতে ভর্তি হতে চেয়েছিল। আমরা চার ভাইবোন খুব একটা পড়াশুনা করতে পারি নাই। মেহেদীর ইচ্ছা ছিল সে পড়াশুনা শেষ করবে, ভালো একটা চাকরি করবে। তাই কেরানীগঞ্জের ওই কারখানাতে কাজ করে নিজের পড়াশুনার খরচ চালাত। কিন্তু আগুনে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। কাল থেকে মেহেদী বার বার আমাকে বলেছে- ‘আমি সুস্থ হবোতো? পড়াশুনা করতে পারবো তো?’
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) কেরানীগঞ্জে আগনে দগ্ধ মেহেদীর বড় বোন সোনিয়া আক্তার কান্নাজরিত কণ্ঠে গণমাধ্যমকে কথাগুলো বলছিলেন। সকালে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট থেকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটের আইসিইউতে স্থানান্তরের পর সেখানেই মারা যান আগুনে দগ্ধ মেহেদী।
সোনিয়া বলেন, তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল মেহেদি। বাবা আলী হোসেন হার্টের রোগী। সংসারে অস্বচ্ছল থাকায় গত দেড় বছর আগে সে কাজ নেয় পুড়ে যাওয়া কারখানাটিতে। সেখানে নয় হাজার টাকার বেতন পেত। ওভার টাইমও করতো। তখন বেতন আসত সাড়ে এগার হাজার টাকা। কিছু টাকা সংসারে দিত। আর কিছু রেখে দিত পড়াশুনা করার জন্য। কিন্তু আগুনে পুড়ে সব স্বপ্নই এখন ছাই হয়ে গেল । পড়াশুনা করার জন্য তার জমানো টাকাগুলো পড়ে রইল। বলতে বলতে ঢুঁকরে কেঁদে উঠেন সোনিয়া।
বুধবার রাতে দগ্ধ মেহেদির বেড়ের পাশে যাকেই পেয়েছে তাকেই বলেছে , ভাই আমি ভর্তি হতে পারবো তো? সুস্থ হলে আমাকে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিবেন? আমার খুব ইচ্ছা পুরান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজ অথবা কবি নজরুল কলেজে পড়ব। এই দুইটা কলেজ আমার বাড়ির কাছে। ম্যানেজমেন্ট অথবা মার্কেটিংয়ে পড়ব।
সোনিয়া জানান, তাদের বাড়ি দক্ষিন কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরে। বর্তমানে দক্ষিন কেরানীগঞ্জেরর সুবাড্ডা এলাকায় থাকে। মেহেদী জিনজিরা পিএম পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে পাশ করে।
মেহেদী গতকাল জানায়, কারখানায় সে সহকারী ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতো। ঘটনার সময় সে কারখানার পাশের গলিতে ডেলিভারি অফিসের সামনে ছিল। সেখানে তার বসসহ কয়েকজন ছিলেন। পাশেই ছিল গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার। সেখানে একটি সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে গ্যাস বেরুচ্ছিল। হঠাৎ আগুনের ফুলকি দেখা দেয়। দৌঁড়াইয়ে বের হতে হতে বিকট আওয়াজ হয় এবং চারিদিকে আগুন ছড়িয়ে পরে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।