রাজনীতি ডেস্ক : বিএনপির ভ্যানগার্ড খ্যাত ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর। দীর্ঘ সাতাশ বছর পর ২৮ বছরে এসে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন অভিভাবক পাবে ছাত্রদল। এবারের কাউন্সিলকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। এর মধ্যে সবচেয়ে কদর বেড়েছে তৃণমূল নেতাদের। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘোষণার পর থেকেই আগ্রহী প্রার্থীরা যাচ্ছেন তৃণমূল নেতাদের দরজায়। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতা ও ভোটারদের কাছে ভোট এবং দোয়া চাইছেন প্রার্থীরা। তৃণমূল নেতারাও প্রার্থীদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনসহ বিগত দিনে রাজপথে ছিলেন কিনা- এসব বিচার-বিশ্লেষণ করে তারা পছন্দের যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে চাইছেন।
দল ও দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনকে পুনর্গঠনের নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েছে বিএনপি। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কোন কমিটি আর হচ্ছে না। তবে এখন থেকে কাউন্সিলররা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করবেন। ছাত্রদলের কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় কমিটি হলে যোগ্য ও ত্যাগীরাই শীর্ষ নেতৃত্বে আসবে এবং দল হবে সিন্ডিকেট ও প্রভাবমুক্ত।
ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ৪৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেছে বাছাই কমিটি। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১৫ ও সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন ৩০ প্রার্থী।
সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল (ঢাকসু) নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়া মোস্তাফিজুর রহমান, বিগত সময়ে যারা রাজনীতি করতে গিয়ে ত্যাগ শিকার করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাইফ মাহমুদ জুয়েল, অপর দিকে এগিয়ে রয়েছেন মো. হাসান (তানজিল হাসান), অন্যদিকে সিনিয়র বিবেচনায় রয়েছেন শাহনেওয়াজ, আন্দোলন করতে গিয়ে গুম হওয়ার কারণে আলেচনায় রয়েছেন শেখ মো. মশিউর রহমান রনি। অপর দিকে বেগম খালেদা জিয়ার একমাত্র লেডি মোটরবাইক গার্ড হিসেবে পরিচিত ডালিয়া রহমানও রয়েছে বেশ আলোচনায়। তাকে নিয়ে শোরগোল পড়ে গেছে রাজনৈতিক পাড়ায়।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচিত হলে সংগঠনকে আন্দোলনমুখী করতে ঢেলে সাজাব। আমি নির্বাচিত হলে বাংলাদেশের হারানো গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব। আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য রাজপথে কার্যত জোড়ালো আন্দোনের গড়ে তুলব এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।
সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, আমি তৃণমূল থেকে ছাত্রদল করে আসছি। বিগত আন্দোলনে আমি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। আমি রাজপথে কর্মসূচিতে থাকার করণে গুলিবিদ্ধ হয়েছি, বারবার কারাবরণ করেছি। আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আমি আশা করি তৃণমূল আমাকে প্রাধান্য দেবে। আগামী দিনে রাজপথে সবাইকে নিয়ে জোড়ালো আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।
তানজিল হাসান বলেন, আমি সবসময় আন্দোলনের জন্য রাজপথে ছিলাম। ১/১১, ১৩ এবং ১৪ সালে সবসময় রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। এজন্য আমাকে বারবার ছাত্রলীগ এবং পুলিশের হাতে নির্যাতিত হতে হয়েছে। রাজপথে আন্দোলনে থাকার কারণেই বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আশা করি কাউন্সিলরা এটা বিবেচনা করবেন। আমি নির্বাচিত হলে সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য তৃণমূল থেকে সকল ইউনিটের কার্যক্রম শেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন জোড়ালো করব।
শেখ মো. মশিউর রহমান রনি বলেন, আমি সবসময় আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। আন্দোলন করতে গিয়ে আমি গুমও হয়েছি। আমি আন্দোলন করতে গিয়ে কখনও জীবনের মায়া করিনি। আমার আত্মবিশ্বাস ভোটাররা আমাকে ভোট দেবেন। আমি নির্বাচিত হলে হারানো গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব।
আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে আগত ৫৮০ জন ভোটার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার জন্য তাদের ভোটধিকার প্রয়োগ করবেন। ২৯ ও ৩০ আগস্ট আপিল নিষ্পত্তি করা হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩১ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রচারণা ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত চলবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।