জুমবাংলা ডেস্ক : সুপার সাইক্লোন আম্ফানের প্রভাবে বরগুনায় যখন ১০ নম্বর মহাবিপদ বিপদ সংকেত তখন বাবা-মাকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যান সদর উপজেলার নিশানবাড়িয়া গ্রামের সেলিম মিয়া। রাতভর আম্ফানের তাণ্ডব শেষে বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকালে বাবা-মাকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। কিন্তু বাড়িতে ফিরে আর মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু আস্তো পাননি। যে ঘরটিতে তারা থাকতেন সেটি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে আম্ফান। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সৃষ্ট ১১ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে তার ঘেরের প্রায় দুই লাখ টাকার মাছ। বাড়িতে ফেরার পর এসব দেখে তার মাথায় যেন বাজ পড়ার মত অবস্থা।
শুক্রবার (২২ মে) সকালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সেলিম মিয়া বলেন, বিষখালী নদীর তীরেই আমাদের বসবাস। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে গত বুধবার (২০ মে) বিকেলে দুটি গরুসহ মা-বাবাকে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। সকালে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরে দেখি ঝড়ে ঘরে ভেঙে গেছে।
তিনি আরও বলেন, অন্যের পুকুরে ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করেছিলাম। আশা ছিল- এবার মাছ বিক্রি করে নতুন একটি ঘর বানাবো। কিন্তু আমার সবকিছুই শেষ করে দিলো আম্ফান। আমি নিজে কষ্ট করে কোথাও না কোথাও থাকাতে পারবো, কিন্তু আমার বৃদ্ধ মা-বাবাকে এখন কোথায় রাখবো?
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় আর্থিক অবস্থা ভালোই ছিল সেলিম মিয়ার বাবা হাসেম মিয়ার। কিন্তু একের পর এক ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে সর্বশান্ত হয়েছেন তিনি।
বৃদ্ধ হাসেম মিয়া বলেন, আমার অনেকগুলো গরু-মহিষ ছিল। জমি ছিলো প্রায় ১২ একর। ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে মুক্ত থাকতে শক্ত করে তুলেছিলাম ঘরও। কিন্তু এসব আমার এখন কিছুই নেই। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং এর ফলে সৃষ্ট নদী ভাঙনে আমার সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে নদী গর্ভে।
সেলিম মিয়ার বৃদ্ধ মা রেনু বেগম বলেন, কাঠের ঘর, সময়ের পরিক্রমায় বাঁধন আলগা হয়ে গেছে। তাই একটু হাওয়া এলেই নড়বড় করতো। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আমাদের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।