জুমবাংলা ডেস্ক : রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত লিয়াজো কমিটি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি নসরুল হামিদ মিলনাতায়নে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। এতে সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত লিয়াজো কমিটির মুফতি আবুল কাশেম ফজলুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নতুন বাংলাদেশের এ শুভযাত্রায় আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে চাই। রাজনৈতিক জীবন বিধান হবে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন অনুকরণে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মানবতার মুক্তির দূত। সুতরাং রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও তার জীবন বিধান অনুসরণ করলেই দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র নেতৃত্বের সমর্থন এবং প্রতিনিধিত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তারা বলেন, বৈষম্যমুক্ত সমাজ এবং প্রত্যেক মানুষের শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করে এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিভোর ছাত্রজনতাকে নিয়ে আজ সারাদেশের মানুষ গর্বিত এবং আশান্বিত। তবে এরই মাঝে ছাত্রদের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়কে ম্লান করতে একশ্রেণি অশুভ পায়তারা করছে।
বক্তারা আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসলাম প্রচারকারী হক্কানী পীর আউলিয়ার মাজারে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে। মসজিদ মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে হুমকি-ধামকি দিয়ে ইমাম, খতিব, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও আলেমদেরকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়। সেগুলো হলো-
১. পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (র) উপলক্ষে সারাদেশে মিলাদ মাহফিল, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কেরাত, হামদ-নাত, রচনা প্রতিযোগিতা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গরীব-দুঃখীদের আপ্যায়ন, জশনে জুলুস (র্যালি) সহ সব আয়োজনকে নির্বিঘ্নে ও যথাযথভাবে পালন নিশ্চিত করতে হবে।
২. দ্রুততম সময়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বীর শহিদদের হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিকমানের তদন্ত সম্পন্ন করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩. গণঅভ্যুত্থানে আহতরা এখনো হাসপাতালে অসহায়ভাবে কাতরাচ্ছে। তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত পূর্বক হতাহতদের পরিবারকে দ্রুত পুনর্বাসনের উদ্যোগ দৃশ্যমান করতে হবে।
৪. বন্যাদুর্গত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনসহ স্বজনহারা পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৫. মসজিদ, মাদরাসা ও মাজার শরীফে হামলাকারী উগ্রবাদীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। আর অন্যায়ভাবে যেসব ইমাম, খতিব, আলেম-ওলামা ও সম্মানিত শিক্ষকদের কর্মস্থল থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছে, তাদের স্বস্থানে স্বপদে অতিদ্রুত পুনর্বহাল করতে হবে।
৬. আহলে সুন্নাতের কেন্দ্রীয় নেতা, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আল্লামা নূরুল ইসলাম ফারুকী (রহ.) হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ডের দ্রুততম সময়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৭. পতিত জুলুমবাজ ফ্যাসিবাদী সরকারের নীল নকশার শিক্ষাব্যবস্থা বাতিল করে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে কুরআন সুন্নাহর সাথে সমন্বয় করে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। মাদরাসা শিক্ষাকে ধ্বংস করার অশুভ পায়তারা বন্ধ করতে হবে। ট্রান্সজেন্ডারসহ সব ইসলাম বিরোধী পশ্চিমা কনসেপ্ট থেকে পাঠ্য বইগুলোকে মুক্ত করতে হবে।
৮. ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুন্নী মর্তাদর্শী আলেম ও ব্যক্তিবর্গকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
৯. স্বাধীন মাতৃভূমি বাংলাদেশের উপর যেকোনো দেশের উপনিবেশ বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মাওলানা আ ন ম মাসউদ হোসাইন আল কাদেরী, মাওলানা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, অধ্যাপক এম এ মোমেন, মুফতি মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মোশারফ হোসেন হেলালী, অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, মাওলানা গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, অ্যাডভোকেট মুখতার আহমেদ সিদ্দিকীসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।