জুমবাংলা ডেস্ক : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আসন্ন ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ নারী দলের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আসতে পারে। নেতৃত্ব দিতে দলের পক্ষ থেকে যোগ্য নারীদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি দিক বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। ছাত্ররাজনীতিতে বিভিন্ন সময়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সন্তান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বারবার মনোনয়নবঞ্চিত ত্যাগী রাজনীতিক, তরুণ সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য ও উচ্চশিক্ষিত নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সৎ, ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজের নারী নেত্রীদের দলে ঠাঁই দিতে চায় আওয়ামী লীগ। কারও কারও বিষয়ে ইতোমধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। তবে চূড়ান্ত হবে ২০-২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য দলের জাতীয় সম্মেলনে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে হওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ শর্ত পূরণে যেসব দল ব্যর্থ হবে আইন অনুযায়ী তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে
যাবে বলেও আরপিওতে বলা আছে। কিন্তু বেশিরভাগ দলই এখন পর্যন্ত এক্ষেত্রে আরপিও অনুসরণ করছে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ শর্ত অনুসরণ করতেই কাজ করে যাচ্ছে।
২০১৬ সালে ২০তম সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ৪টি পদ এখনো খালি আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি পদে আছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ডা. দীপু মনি। প্রেসিডিয়াম মেম্বার পদে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী ও সাহারা খাতুনকে স্থান দেওয়া হয়েছে। দলের সম্পাদক পদে আছেন ৫ নারী। তাদের মধ্যে কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লায়লী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, শিক্ষা ও মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ। কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে আছেন ৫ জন। তাদের মধ্যে সিমিন হোসেন রিমি, বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, পারভীন জামান কল্পনা, মেরিনা জাহান, মারুফা আক্তার পপি।
বিভিন্ন দলের সর্বশেষ কাউন্সিল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অন্য দলের তুলনায় আওয়ামী লীগে নারী নেতৃত্ব বেশি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৩ শতাংশ, বিএনপি ১৩ দশমিক ০৫ ও জাতীয় পার্টি ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ কোটা পূরণ করেছে। সব দলেই ক্রমশ নারী নেতৃত্বের হার বাড়ছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবে। সে প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। ’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আরপিওর বাধ্যবাধকতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যাশা করছি সঠিক সময়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব আওয়ামী লীগে চলে আসবে। প্রাসঙ্গিকভাবে বলা যায়, শুধু দলে নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নারী ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। বর্তমানে বিপুলসংখ্যক নারী প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন। এর পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা ভূমিকা রেখে আসছেন। এর নেপথ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যেসব নারী নেতৃত্ব দলের বিভিন্ন পদে আছে তাদের পুনরায় রাখা হতে পারে। তবে তাদের কারও কারও পদ বদল হতে পারে। আসন্ন সম্মেলনে নতুন করে যুক্ত হতে পারেন আরও বেশ কয়েকজন নারী। এ বিষয়ে আলোচনায় রয়েছেন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের কন্যা ও প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছোট বোন ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. এএফএম আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও সাবেক সাংসদ ফজিলাতুন নেছা বাপ্পি, সাবেক সাংসদ সানজিদা খানম, বরিশালের প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেছা হিরন, জামালপুরের সংরক্ষিত নারী সাংসদ ও মেজর জেনারেল খালেদের মেয়ে মাহজাবিন খালেদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ, কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আফজল খানের মেয়ে সংরক্ষিত আসনের সাংসদ আঞ্জুম সুলতানা সীমা প্রমুখ। সূত্র : আমাদের সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।