আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও- রাস্তায় গাড়ির চালকের আসনে মহিলাদের দেখলে এখন অ’বাক হওয়ার কিছুই নেই। পুরুষদের হাতই শুধু স্টিয়ারিংয়ে থাকবে এমনটা ভেবে নেওয়া বোধ হয় আর ঠিক হবে না। কিন্তু আজও বাস-ট্রাক এমনই হেভি যানে চালকের আসনে পুরুষদের দেখেই অভ্যস্ত সকলে।
সেই চোখের অভ্যাসকেই ধা’ক্কা দিয়ে বাসের চালকের আসনে বসলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা এক তরুণী। প্রতীক্ষা দাস নামে ২৪ বছরের ওই তরুণী গত বছর থেকেই বাস চালানো শুরু করেন। জানা গেছে, প্রতীক্ষাই ভারতের মুম্বইয়ের প্রথম মহিলা ড্রাইভার।
প্রতীক্ষা জানান, গত ৬ বছর ধরে তিনি ড্রাইভার হওয়ারই স্বপ্ন দেখেছেন। তাও ছোট-খাটো গাড়ি নয়, হেভি যান, একেবারে বাস। বাইক দিয়ে শুরু করে, চার চাকা, সবকিছু চালালেও তাকে আকর্ষণ করেছে বাস এবং ট্রাক। যা চালিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত প্রতীক্ষা। যেন এই পেশাতে নিযুক্ত হওয়ারই প্রতীক্ষায় ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় বিমান চালানোরও স্বপ্ন রয়েছে প্রতীক্ষার।
কেন জীবনে বিয়ে করেননি, জানালেন রতন টাটা!
ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি ও জনহিতৈষী রতন টাটা। তিনি এখন অবসরে। অবসর কেমন কাটছে, টাটা ন্যানোর পেছনের স্বপ্ন, কেন বিয়েটা করা হলো না এসব নিয়ে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তিনি। হিউম্যানস অব বোম্বে নামে একটি ফেসবুক পেজে কয়েকটি পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে। শুরুতেই তিনি বলেন, কোম্পানি বড় করাই ছিল আমা’র জীবনের ধ্যানজ্ঞান।
তাকে মানুষকে কিছু ফিরিয়ে দেয়ার তাড়নাটি একেবারে শুরু থেকেই টাটার ডিএনএর মধ্যে ছিল। ৮২ বছর বসয়ী এ মানবদরদী বলেন, ধরুন জামশেদপুরে আম’রা যখন কারখানা স্থাপন করলাম। বুঝতে পারলাম, আমাদের কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে, তাদের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হচ্ছে কিন্তু আশেপাশের গ্রামগুলোর মানুষের অবস্থা তখনো খুব খা’রাপ। এরপরই আম’রা তাদের জীবমান বদলে দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করি।
রতন টাকা এখন টাটা সনসের এমেরিটাস চেয়ারম্যান। টাটা ন্যানোর ধারণাটি এসেছিল তার মা’থা থেকেই। ছোট আকারের সুলভ এই গাড়িটি প্রস্তুত করার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য ছিল, সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে একটি গাড়ি উপহার দেয়া। তিনি বলেন, আমি একদিন দেখলাম তুমুল বৃষ্টির মধ্যে একটি পরিবারের চার সদস্য মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছে।
আমি ভাবলাম, বিকল্প না থাকার কারণে যারা এভাবে জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে চলাচল করে তাদের জন্য আরো কিছু করতে হবে। খুব কম সময়ের মধ্যেই ন্যানো বাজারে আসে। তবে এ গাড়ি তৈরিতে খরচ তুলনামূলক বেশিই হয়েছিল বলে জানান রতন টানা। তিনি বলেন, কিন্তু আমি তো অঙ্গীকার করেছিলাম এবং আম’রা সেটি রক্ষা করেছি। পেছনে ফিরে তাকালে আমি এখনো ওই গাড়িটি এবং এটি নিয়ে সামনে আগানোর সিদ্ধান্তের জন্য গর্ববোধ করি।
ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বলতে গিয়ে টাটা তার বিয়ের প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন । তিনি বলেন, বিয়ে প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাজের প্রতি অসম্ভব একাগ্রতা সেটিকে পরিণতি পর্যন্ত যেতে বাধা দিয়েছে। দুই তিনবার এ একটা কা’রণেই তার বিয়ে ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, সব সময় আমি হয় বোম্বে হাউজ নয়তো বাইরে ভ্রমণে থাকতাম। দুই-তিনটা মে’য়ের সঙ্গে আমা’র বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। কা’রণ বিয়েটা হলে তাকে তার জীবনযাপন পদ্ধতি বদলে ফেলতে হতো, আমা’র সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে হতো। আমা’র সঙ্গে বিয়েটা ঠিক যায় না।
তবে অবসরে যাওয়ার পর জীবনটা সত্যি সত্যিই বদলে গেছে বলে জানান টাটা। এখন আর গলফ খেলা বা সৈকতে বসে ককটেলে চু’মক দেয়ার মতো জীবন নেই। জীবনে আরো ভালো কিছু করার আকা’ঙ্ক্ষাটিা তার এখনো যায়নি।
ব্যয়সাধ্য ক্যা’নসা’র চি’কিৎ’সা থেকে শুরু করে গ্রামীণ ভারতের জীবনের উন্নতি করাসহ ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছেন রতন টাটা। টাটা ট্রাস্ট ঘিরেই তার এখনকার সব ধ্যানজ্ঞান।
একটি উপদেশ দিয়ে সাক্ষাৎকার শেষ করেন রতন টাটা। তিনি বলেন, উপদেশের কথা ভুলে যাও এবং সঠিক কাজটি করো। এমনকি সেটি তোমা’র কাঠে কঠিন মনে হলেও। যখন তুমি জীবনের পেছনে ফিরে তাকাবে, এটিই তোমা’র জন্য জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হয়ে থাকবে। সঠিক কাজটি করো।
রতন টাটা বর্তমানে টাটা গ্রুপের দাতব্য প্রতিষ্ঠান টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। অবসরের পর দীর্ঘদিন জনসমক্ষে আসেননি এবং প্রায় বি’চ্ছিন্ন থেকেছেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে সোস্যাল মিডিয়ায় যোগ দেন তিনি।
আজ থেকে দশ বছর আগে টাটা ন্যানো উন্মোচন করা হয়। ভারতের সবচেয়ে সুলভ গাড়ি ছিল এটি। কিন্তু এ গাড়ি বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। তাছাড়া বেশ কয়েকবার ইঞ্জিনে আ গু’ন লেগে যাওয়ার ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।