আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: সমুদ্র আমাকে টানে, আমার সহধর্মিণী ও আত্মজাকে টানে পাহাড় আর চা বাগান। ফলে বহুবার পারিবারিক সফরে কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবানের পার্বত্য এলাকা ও সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ভ্রমণ করা হয়েছে। ভারতের দার্জিলিং, কুলু, মানালি, রোটাং পাস, নৈনিতাল, দেরাদূন, মাইসূর নেপাল- ভুটানের পাহাড়ি অঞ্চল সফরের সুযোগ হয়েছে।
আমাদের তিন পার্বত্য জেলার আনাচে কানাচে ও গহীনে সফর করে এর অপরূপ সৌন্দর্যের বিশালতায় অবগাহন করেছি। আমাদের পাহাড়ী এলাকা এবং তিন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাহাড়ী এলাকার মাঝে প্রকৃতির চেয়ে মানবিক সৌন্দর্যের কিছুটা পার্থক্য ছিল। ভারত, নেপাল, ভুটানে দেখেছি, প্রত্যুষে শিশুরা সুন্দর স্কুল ড্রেস পড়ে পরিপাটি হয়ে লাইন ধরে স্কুল- কলেজে যায়, বিকেলে ফিরে। রাস্তার দু’পাশ ধরে পরিপাটি কোমলমতিদের শৃঙ্কলাবদ্ধভাবে পথচলা দেখলে মনে হতো যেন একটি শিশু সেনাবাহিনী মার্চপাস্ট করেছ। পাহাড় ও বৃক্ষরাজির সবুজের বিশালতার মাঝে শিশুদের এই পরিপাটি পথচলা সৌন্দর্য আমার মাঝে যুগপৎভাবে অভিভূত ও কষ্টের সৃষ্টি করত। কষ্টটা ছিল, আমাদের পার্বত্য কন্যার বুকে এই সৌন্দর্য আমি কবে দেখব।
শোকর আলহামদুলিল্লাহ!
গতকাল (২০ মার্চ) খাগড়াছড়ি এবং আজ (২১ মার্চ) রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় যোগ দিতে এসে এবার আমার তৃষ্ণার্ত দুই নয়নের তৃষ্ণা নিবারণ হয়েছে। গতকাল সকালে ফেনী থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়া এবং আজ সকালে রাঙামাটি যাওয়ার সময় পথে পথে দু’ধারে আমাদের পাহাড়ের সোনামণিদের ড্রেস পড়ে পরিপাটি হয়ে স্কুল- কলেজে যাওয়ার অদ্ভুত দৃশ্য আমার মাঝে পরম সুখানুভূতির উদ্ভব করেছে। পাশাপাশি রাস্তায় রাস্তায় মোটর সাইকেল, অন্যান্য যানবাহনের অধিক উপস্থিতি, মানুষের পরণের কাপড়ের পরিবর্তন এই জনপদের মানুষের জীবন মানের উন্নয়নের স্বাক্ষর বহন করছে।
এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে কেবল মাত্র শান্তি প্রতিষ্ঠা, শান্তিময় পরিস্থিতির ধারাবহিক উন্নয়ন ও বাঁধা দূরীকরনের ক্ষেত্রে সরকারে আন্তরিক অধ্যাবসায়, ধর্মীয় সম্প্রীতিময় সহাবস্থান, দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুতের আলো পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সরকারের সফলতা। পাশাপাশি, বিভিন্ন ভাষাভাষীদের নিজ ভাষায় শিক্ষার অধিকার ও স্বীয় মাতৃভাষার মর্যাদা সংরক্ষণে সরকার প্রধানের যুগান্তকারী উদার নীতি এই জনপদে শিক্ষার আলো প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।
শান্তি প্রতিষ্ঠার ফলে পর্যটন শিল্পের ক্রম বিকাশ এবং অর্থকরী ফসল উৎপাদন ও বাজারজাতকরনের ক্রম সহজীকরন এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন নতুন পালক যুক্ত করছে।
এই ইতিবাচক পরিবর্তনের মহা কারিগর বিশ্বসেরা বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, বাঙালির আপন প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
অভিবাদন তোমায় প্রিয় শেখ হাসিনা। তোমার মহৎ কর্মের মহিমা তোমার পরপার যাত্রার পরও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাংলাদেশের প্রজন্মের পর প্রজন্মের হৃদয় মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে। তুমি চিরকাল বাতিঘর হিসেবে জাগরুক থাকবে বাঙালীর চেতনা ও বিশ্বাসে।
পরম করুনাময় মহান রাব্বুল আ’লামীনের দরবারে অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা, তুমি আমাদের একজন শেখ হাসিনা দিয়েছ এবং তাঁর হাতে অবিরাম দেশ পরিচালনার কঠিন দায়িত্ব অর্পণ করে রেখেছ।
(লেখক জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।