ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক মাস আগে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে উঠেছেন।
আজ রোববার (১২ মার্চ) বেলা ১২ টায় বাবা আতাউর রহমানের সাথে ক্যাম্পাসে আসেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের বকুল ব্লকের ৫০১ নম্বর কক্ষে উঠেন ফুলপরী। এখানে আজ থেকে তাঁর নামে বরাদ্দ হওয়া আসনে থাকবেন তিনি।
এ সময় ফুলপরি খাতুন বলেন, আজ প্রথম দিনের মতোই অনুভূতি কাজ করছে। দুশ্চিন্তা বা কোনো ভয়-সংকোচ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না সে-রকম কোনো সংকোচ নাই। আগামীকাল থেকে ক্লাস শুরু করার কথাও জানান তিনি।
সঙ্গে আসা ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, মেয়েকে রেখে গেলাম। পাঁচ বছর পর যেন ভালোভাবে বাসায় ফেরে এটাই চাওয়া।
এর আগে গত ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সেলিনা নাসরিন ফুলপরীকে শেখ হাসিনা হল থেকে স্থানান্তরিত করে তার পছন্দ মত বঙ্গমাতা হলে আসন বরাদ্দ দেন।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান বলেন, ফুলপরীকে আগেই সীট বরাদ্দ দেয়া হলেও আজ সে তার জিনিসপত্র নিয়ে হলে উঠেছে। হলে তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ তার প্রাপ্য সকল সুবিধা দেওয়া হবে।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি বখতিয়ার হাসান বলেন, আমরা ওই শিক্ষার্থীর বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। ক্লাসে এসে যেন কোনো ধরণের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছি।
এদিকে ঘটনার এক মাস পার হয়ে গেলেও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণের ঘটনায় ব্যবহৃত হালিমা খাতুন উর্মীর মোবাইল ফোন ও সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কয়েকটি তদন্ত কমিটি ও চিঠি চালাচালি করার মাঝেই সীমাবদ্ধ আছে। তবে অভিযুক্তরা নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও ভিডিও ধারণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ফুলপরী খাতুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, বাস্তবতা বুঝতে হবে। কেউ যদি শয়তানি করে বলে মোবাইল হারিয়ে গেছে, তাহলে কীভাবে উদ্ধার করা যাবে? ওই ছাত্রী পানিতে ফেলে দিয়েও বলতে পারে হারিয়ে গেছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, চিঠি পেয়েই আমরা মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রেখেছি। যে ছাত্রী মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেছিলেন, তিনি বলেছেন মোবাইলটি হারিয়ে গেছে। আমরা আমাদের মতো করে, হারানো বস্তু উদ্ধারের মতো করে চেষ্টা চালাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফুলপরীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গত ১ মার্চ সানজিদা অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে ক্যাম্পাস থেকে সাময়িক বহিষ্কার, হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার, ভুক্তভোগী ফুলপরীর নিরাপত্তা ও তার পছন্দের হলে উঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে সেদিনই হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করে প্রশাসন।
এছাড়া গত ৪ মার্চ পাঁচ অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কেন তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে তাঁদের হল ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।