জুমবাংলা ডেস্ক : ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা সিইও মোহাম্মদ রাসেলের বাসা থেকে কোম্পানিটির ব্যবসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় র্যাব সদর দপ্তরে তিনি এ কথা বলেন। তবে নথির ধরণ নিয়ে বিস্তারিত জানাননি খন্দকার আল মঈন।
এসময় গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রতারিতরা যাতে তাদের টাকা ফেরত পায় এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।
এর আগে নানা জল্পনা-কল্পনা আর অভিযোগ ও তদন্ত শেষে গ্রেপ্তার করা হয় বর্তমান সময়ের আলোচিত প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় পাওনা টাকার দাবিতে তার বাড়ির সামনে ভিড় করেন শত শত গ্রাহক।
প্রতারণার অভিযোগে গ্রাহকের করা মামলায় বৃহস্পতিবার বিকেলে রাসেলের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। ঘণ্টা দুয়েকের অভিযান শেষে সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে ভবনের নিচে নামিয়ে আনে র্যাব-২। পরে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় র্যাব সদর দপ্তরে।
পরে ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আল মঈন জানান রাসেলের বাসা থেকে ইভ্যালির ব্যবসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গেছে।
বুধবার রাতে গুলশান থানায় প্রতিষ্ঠানটির সিইও ও চেয়ারম্যানকে আসামি করে প্রতারণার মামলা করেন এক গ্রাহক। অভিযোগ আছে, গ্রাহক ও বিভিন্ন মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানের ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইভ্যালি।
২০১৬ সালে প্রথমে অনলাইনে ডায়াপার বিক্রি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন রাসেল। ২০১৭ সালে এই ব্যবসা করতে গিয়ে বড় একটি অনলাইন প্লাটফর্মের কথা চিন্তা করেন তিনি। সেই চিন্তা থেকেই প্রতিষ্ঠা করেন দেশীয় ই-কমার্স কোম্পানি ‘ইভ্যালি’। প্রায় ১৭ লাখ নিয়মিত ক্রেতা, ২০ হাজারের বেশি বিক্রেতা নিয়ে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে স্বল্প সময়ে প্রথম সারিতে উঠে আসে ‘ইভ্যালি’।
বিশাল অফার, ছাড়ের ছড়াছড়ি আর ক্যাশব্যাকের আকর্ষণ দিয়ে ক্রেতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে সফল হলেও প্রতিষ্ঠানটি এখন গ্রাহক ভোগান্তির শীর্ষে অবস্থান করছে। ক্যাশব্যাক দীর্ঘদিন কোম্পানির হিসাবে পড়ে থাকলেও জটিল নিয়মের কারণে গ্রাহক তা ক্যাশ (নগদায়ন) করাতে পারে না। ক্যাশব্যাক অফারের সঙ্গে আরও টাকা যোগ করে তবেই সে টাকা দিয়ে নতুন করে পণ্য কিনতে হয়।
মোটরসাইকেল, গাড়ি, মোবাইল, ঘরের সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রের মতো উচ্চমূল্যের পণ্যে লোভনীয় ছাড় দেয় ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠার শুরুতে সাইক্লোন, আর্থকোয়েক ইত্যাদি নামে তারা ক্রেতাদের ১০০ শতাংশ ও ১৫০ শতাংশ ক্যাশব্যাকের মতো অত্যন্ত লোভনীয় অফার দেয়। ইভ্যালির ব্যবসার এ কৌশলের ফলে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি অনেক সমালোচনারও সৃষ্টি হয়।
বিশাল অফার, ছাড়ের ছড়াছড়ি আর ক্যাশব্যাকের আকর্ষণ দিয়ে ক্রেতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে সফল হলেও প্রতিষ্ঠানটি এখন গ্রাহক ভোগান্তির শীর্ষে।
মোহাম্মদ রাসেল রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ২০১১ সালে ঢাকা ব্যাংকে চাকরি নেন তিনি। চাকরির পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করেন রাসেল। ৬ বছর পর ঢাকা ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে অনলাইনে পণ্য বেচাকেনার ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।