জুমবাংলা ডেস্ক : কুষ্টিয়ার কুমারখালী শিলাইদহের পদ্মা নদীতে দুই এএসআই নিখোঁজ হয়েছেন। তবে তাদের নিখোঁজের কারণ নিয়ে ‘ধুম্রজাল’ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইলিশ মাছ লুটপাট করতে গিয়ে জেলেদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় দুই এএসআই নিখোঁজ হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে গিয়ে দুই নৌকার সংঘর্ষে তারা নিখোঁজ হয়েছেন।
সোমবার ভোর রাতে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের স্রীখোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় আহত হয়েছেন চারজন। তাদের মধ্যে দুইজন ইউপি সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।
নিখোঁজ হওয়া দুই এএসআই হলেন সদরুল হাসান (৪০) ও মুকুল হোসেন (৪০)। তারা কুমারখালী থানায় কর্মরত।
আহতরা হলেন- কুমারখালী থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটন। তাদের মধ্যে ওই এসআই নজরুল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন দেখিয়ে বাসায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আর দুই ইউপি সদস্য রয়েছেন আত্মগোপনে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু জেলে নদীতে মাছ ধরছিল। গভীর রাতে দুই ইউপি মেম্বার ও ৬ পুলিশ পদ্মা নদীর বেড় কালোয়া এলাকায় নেমে অভিযানের কথা বলে কয়েকজন জেলের কাছ থেকে ইলিশ মাছ লুটপাট করে নদীর কিনারে যায়। পরে শিলাইদহের শ্রীখোল এলাকায় দুর্বৃত্তরা পুলিশ ও ইউপি মেম্বারদের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এসে এসআই নজরুলসহ ৪ পুলিশ ও দুই মেম্বারকে উদ্ধার করে। তবে দুই এএসআইকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সোমবার সকালে সরেজমিনে বেড় কালোয়া মোড়ে গিয়ে জেলেদের সঙ্গে কথা হয়। এসময় এজাহার শেখ বলেন, রাতে পদ্মায় ইলিশ ধরছিলাম। সে সময় ছলিম ও টিটন মেম্বারসহ ৬ জন পুলিশ এসে আমার কাছে থাকা মাছ নিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় আবার মাছ ধরার অনুমতি দিয়ে যায় তারা।
তবে রাতে খবর পেয়ে আহত পুলিশদের উদ্ধার করেন বেড় কালোয়া এলাকার জেলেদের নেতা ইয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাত তিনটার দিকে জেলেরা প্রথমে তাকে ফোন দিয়ে জানায় নদীতে ঝামেলা হচ্ছে। ছলিম ও টিটন মেম্বার এবং পুলিশ এসে জেলেদের কাছ থেকে তেল ও মাছ লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সে খবর শুনেও তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। পরে ভোর ৫ টার দিকে এএসআই সবদুল আমাকে ফোনে বলেন, ভাই আমরা বিপদে আছি সাহায্য করেন। তখন একটি নৌকায় চারজন গিয়ে এসআই নজরুলসহ ৩ পুলিশ এবং দুই মেম্বারকে উদ্ধার করি। এসময় এসআই নজরুলের মাথা ফাঁটা ছিল।
ইয়ারুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সবাই সাদাপোশাকে ছিলেন। তারা জেলেদের কাছ থেকে মাছ, তেল ও টাকা লুট করে ফিরছিল। এসময় কিছু জেলে ডাকাত ভেবে হামলা চালিয়েছে। ফলে তারা আহত হন।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
তবে লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারখালী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে গিয়ে দুই নৌকার সংঘর্ষে দুই এএসআই নিখোঁজ হয়েছে। বাকি ৪ পুলিশ সাঁতরে তীরে এসেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এগুলো তদন্তের বিষয়। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। নিখোঁজ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অভিযান চালাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।