আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইয়েমেন থেকে ছোড়া হুতি বিদ্রোহীদের একটি শক্তিশালী হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্প্রতি ইসরাইলের তেল আবিবের বেন গুরিয়ান বিমানবন্দরের আশেপাশে বিস্ফোরিত হয়েছে। এই ঘটনায় বিমানবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিমানবন্দরের মাটিতে প্রায় ২৫ মিটার গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলা থেকে রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয় যা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা কাঠামোকে চিন্তার মধ্যে ফেলেছে।
ইসরাইলের ওপর হুতি বিদ্রোহীদের হামলা
হুতি বিদ্রোহীদের এই হামলার সময় বিমানবন্দরের কাছে জমায়েত হওয়া সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আটজনের মতো মানুষ আহত হন যাদের মধ্যে কয়েকজন বাংকারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ ঘটনার পরপরই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস ইসরাইলগামী ফ্লাইট বাতিল করে এবং স্থগিত করে দেয়, যার ফলে বিশ্বের নানাপ্রান্তের মানুষ তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হন।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভূমিকা
ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা হিসেবে আয়রন ডোম, ডেভিড’স স্লিং, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় তৈরি থার্ড সিস্টেম থাকা সত্ত্বেও এই হামলার পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব হয়নি। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) পরে স্বীকার করেছে যে, তারা ক্ষেপণাস্ত্রটি ঠেকানোর জন্য একাধিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেও ব্যর্থ হয়েছে।
তেল আবিবে সংঘটিত এই আক্রমণের পর শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়া কালো ধোঁয়া লক্ষ করা যায়। আতঙ্কিত জনগণ দ্রুত রাস্তা ফাঁকা করে নিরাপদ আশ্রয়স্থল খোঁজার চেষ্টা করেন। ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে এবং বাড়িগুলিতে বোমার আশ্রয়স্থল রয়েছে যা সাধারণত বন্ধ থাকে কিন্তু এই ধরনের সংকেত শুনে দ্রুত খোলা হয়।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা
হুতিদের এই আক্রমণগুলির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা কাঠামো গভীর সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ায় প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, হুতিদের দমনে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ ইতিমধ্যেই মাত্র তিন সপ্তাহে এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, তবুও তারা বারবার প্রতিহত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
ভবিষ্যতের প্রভাব ও বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত দুর্বল গোষ্ঠীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র যদি ইসরাইলের মতো সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে, তাহলে তা কেবল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নয় বরং গোটা নিরাপত্তা কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলে। তারা মনে করছেন, এই আক্রমণটির প্রভাবে আগামী দিনগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন মোড় আসতে পারে। এই কারণে অঞ্চলে বিশেষজ্ঞরা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচনার তাগিদ দেখা দিয়েছে।
হুতি বিদ্রোহীদের হামলার প্রভাব ও সম্পর্কিত তথ্য
- ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা কিভাবে ইসরাইলে হামলা চালায়?
হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরাইলের ওপর হামলা চালায়। তাদের সামরিক দক্ষতা ও প্রযুক্তি এই হামলা সংগঠনে ভূমিকা পালন করে। - ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেন ব্যর্থ হয়েছে?
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন আয়রন ডোম এবং ডেভিড’স স্লিং, এই হামলা থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, যা তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে ফাঁকফোকর তুলে ধরেছে। - এই হামলার পর ইসরাইলের বিমানবন্দরগুলির কী অবস্থা?
হামলার ফলে ইসরাইলের বিমানবন্দরগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে এবং বিভিন্ন এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইট স্থগিত রেখেছে। - হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের কী প্রভাব পড়ছে?
আক্রমণের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও বিষিয়ে উঠেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছে। - ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী কী উদ্যোগ নিচ্ছেন?
ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী পরবর্তী আক্রমণ প্রতিহত করতে তাদের প্রতিরক্ষা কৌশল ও ব্যবস্থা পুনর্মূল্যান করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।