জুমবাংলা ডেস্ক : মাদারীপুরের শিবচরে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে এতিম দুই যুবক। মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে এ নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (০৩ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের কাজীকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার দুই যুবক হলেন- মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের কাজীকান্দি গ্রামের মৃত সামচুউদ্দিন হাওলাদারের আলী হোসেন (২৮) ও খুলনার জেলার রূপশা উপজেলার লবনচোরা গ্রামের নজরুল ইসলাম ছেলে রুবেল হোসেন (২৪)। আলী রাজধানী ঢাকায় বাসগাড়ি চালায় এবং রুবেল তার সহযোগি। করোনায় কাজ না থাকায় তারা দুইজনে বেশ কিছুদিন ধরে মাদারীপুরে গ্রামের বাড়ি আসেন।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, শুক্রবার (৩ জুলাই) দুপুরে শিবচরের সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের কাজীকান্দি এলাকায় চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিল আলী হোসেন ও রুবেল। হঠাৎ সেখানে হানা দেয় মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই আল আমিন খন্দকার ও এএসআই শাহীনসহ দুইজন কনস্টেবল। পরে আলী হোসেন ও রুবেলের দেহে তল্লাসী চালায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা। তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে ইয়াবা ও গাঁজার ছোট ছোট দুটি প্যাকেট হাতে ধরিয়ে ফাঁসাতে চান ডিবির ওই চার সদস্য। পরবর্তীতে আলী হোসেনের পটেকে থাকা গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে তা ভেঙ্গে ফেলে এএসআই আল আমিন তার সহযোগিরা। এতেও ক্ষান্ত হননি গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। পরে আলী ও রুবেলকে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে লাথির সঙ্গে কিল ঘুষি দেন তারা। একপর্যায়ে ওই দুই যুবকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে তা ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে ডিবির চার সদস্য চলে আসেন।
ভুক্তভোগী আলী হোসেন অভিযোগ করে বলেন, করোনার মধ্যে কাজ হারিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসি। কিন্তু শুক্রবার মাদারীপুর থেকে কয়েকজন ডিবি পুলিশ এসে অকারণেই আমাকে ও আমার সহযোগীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তারা মাদক দিয়ে আমাদের ফাঁসাতে চেয়েছিল। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে চলে যান তারা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
আরেক ভুক্তভোগী রুবেল অভিযোগ করেন, তারা যখন আমাদের মাটিতে ফেলে পা দিয়ে লাথি দিচ্ছে, তখন আমরা বলেছিলাম আমাদের অপরাধ কি? যদি কোন অপরাধ থাকে তাহলে ধরে নিয়ে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরও বেশি পেটানো শুরু করে তারা।
এদিকে অভিযুক্ত ডিবির এএসআই আল আমিন খন্দকার দাবি করেন, এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে তারা ব্যর্থ হন। পরে তার সহযোগী আলী ও রুবেলকে নিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীকে না পাওয়া গেলে আলী ও রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরবর্তীতে তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু তাদের শরীরে কোন আঘাত করা হয়নি।
মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক) আল মামুন বলেন, ঘটনাটি জানা নেই। তবে, শুক্রবার শিবচর উপজেলায় ডিবির ওই চার সদস্য অভিযানে গিয়েছিল।
জেলার গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র ও মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. আব্দুল হান্নান জানান, অকারণে কাউকে মারধর করা পুলিশের ধর্মে নেই। তবে, শিবচরে এমন ঘটনা ঘটেছে আমার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ডিবির কোন অফিসার অন্যায় কিছু করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। ভুক্তভোগী ওই দুই যুবক অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সূত্র : সময় নিউজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।