নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমে একটি কারখানার শ্রমিকরা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন।
আজ শনিবার (২৭ জুন) সকালে পরচুলা তৈরির কারখানা ‘এভারগ্রীণ প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরী বিডি লিমিটেড’ এর শ্রমিকরা এই বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা বলেন, সকালে কারখানা থেকে কয়েকজন দক্ষ শ্রমিককে ডেকে তাদের পরিচয়পত্র রেখে দিয়ে ছাঁটাই করা হয়। খবরটি পেয়ে আরও শ্রমিক এসে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে পাঁচটি কভার্ডভ্যান, ১০টির মতো মোটরসাইকেল এবং অফিসের কাগজপত্র ও কম্পিউটারে অগ্নি সংযোগ করেন শ্রমিকরা।
উত্তরা ইপিজেড, নীলফামারী ও সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট বেলা ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এভারগ্রীণ প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরী বিডি লিমিটেডের শ্রমিকদের অভিযোগ, বেপজার বিধি লঙ্ঘন করে মাঝেমধ্যেই শ্রমিক ছাঁটাই করে কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাসের এই সময়ে ছাঁটাইয়ের মাত্রা বেড়ে গেছে। অর্থ বাঁচাতে তারা দক্ষ শ্রমিক ছাঁটাই করে নতুন নিয়োগ করে। ছাঁটাই হওয়ারা অসহায় হয়ে কর্তপক্ষের শরণাপন্ন হলে তাদের নতুন শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেয়, যাতে তারা মজুরি কম পান; নায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হন।
অভিযোগের বিষয়ে এভারগ্রীণ প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরী বিডি লিমিটেডের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম আতিকুর রহমান বলেন, এই অসন্তোষ যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে না যায় সেজন্য আমারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি এবং আল্লাহর রহমতে সমাধানে আমরা সফল হয়েছি। এখানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা আমরা দেখেছি; তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাদের উত্তেজিত করতে পারে এমন কোনো কাজ আমরা করিনি। তাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে ফেরত পাঠিয়েছি।
উত্তরা ইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার এনামূল হক বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়গুলো মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করা হবে। ইপিজেডে এই একমাত্র কোম্পানিতে সমস্যা আছে, অন্য কোম্পানিগুলো বেপজার আইন অনুযায়ী সবকিছু করে। এখানেই একটু সমস্যা আছে, আমি মনে করি, এটা আলোচনা করে অবশ্যই সমাধান করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের মালিক বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে ওয়ার্কারদের মাঝে তুলে ধরেছেন। উনি নিজে ক্ষমাও চেয়েছেন এবং বিষয়গুলো সমাধান করবেন বলে বলেছেন।
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একদিকে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। আরেক দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হয়েছে। সবাইকে নিয়ে মিনিমাইজ করার পর ওয়ারর্কারা বাড়ি ফিরে ফিরে গেছেন। মালিক কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন ওয়ার্কারদের দাবিগুলো তারা বাস্তবায়ন করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।