জুমবাংলা ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে মন্দার মধ্যে আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় উন্নত দেশগুলোর খালি কনটেইনারের ডাম্পিং স্টেশনে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা কিংবা মালয়েশিয়ার তুলনায় ভাড়া কম হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে খালি কনটেইনার বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি ১৯টি প্রাইভেট আইসিডিতে এখন ৭০ হাজারের বেশি খালি কনটেইনার রয়েছে।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বন্দরে পাশের ১৯টি প্রাইভেট আইসিডি সরেজমিনে দেখা যায়, সবগুলোতেই পণ্য ভর্তি কনটেইনারের পরিবর্তে খালি কনটেইনারের স্তূপ জমে আছে। খালি কনটেইনারের সারি এখন চার ধাপে গিয়ে ঠেকেছে।
এ ১৯টি প্রাইভেট আইসিডিতে ৪৫ হাজার খালি কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু গত ৫ মাসের বেশি সময় ধরে এইসব প্রাইভেট আইসিডিতে খালি কনটেইনার রয়েছে ৫৫ হাজারেরও বেশি। অর্থাৎ প্রাইভেট আইসিডিগুলোয় খালি কনটেইনারের স্তূপ জমছে। ফলে রাজস্ব আদায় হচ্ছে খুবই কম।
প্রাইভেট আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) তথ্য অনুসারে, কেডিএস ডিপোতে রেকর্ড পরিমাণ ৬ হাজার ৩৮৫টি, পোর্টলিংকে ৫ হাজার ৩৯৬টি, এসাক ব্রাদার্স ডিপোতে ৪ হাজার ৫০৪টি, বিএম ডিপোতে ৪ হাজার ২৭৮টি, এসএপিএলে ৩ হাজার ৪০০টি এবং ইনকন্ট্রেডে ৩ হাজার ১৮৫টি খালি কনটেইনার রয়েছে। আর বাকি আইসিডির কোনোটিতেই ২ হাজারের নিচে খালি কনটেইনার নেই।
বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, ‘প্রথমত বিদেশে কনটেইনারের চাহিদা কমে গেছে। দ্বিতীয়ত আমাদের দেশে খালি কনটেইনার রাখার খরচ কম। এবং তৃতীয়ত রফতানি পণ্যের ক্ষেত্রে খালি কনটেইনার ব্যবহার হচ্ছে।’
একই পরিস্থিতি চট্টগ্রাম বন্দরেও। এখানেও জমছে খালি কনটেইনারের স্তূপ। ৭ হাজার খালি কনটেইনার ধারণ ক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে রয়েছে ৭ হাজার ৯৩৮টি কনটেইনার।
তবে খালি কনটেইনারের তুলনায় পণ্যবাহী কনটেইনারকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
চট্টগ্রাম বন্দরে ২০ ফুটের একটি খালি কনটেইনার একদিন রাখার ভাড়া ৬ মার্কিন ডলার। যা ৪০ ফুটের কনটেইনারের ক্ষেত্রে ১২ মার্কিন ডলার। তবে অফডকে এই ভাড়া ৯০ এবং ১৮০ টাকা। তার বিপরীতে সিঙ্গাপুর-শ্রীলংকা এবং মালয়েশিয়ার ভাড়া ৮ মার্কিন ডলারের বেশি। তুলনামূলক ভাড়া কম হওয়ায় খালি কনটেইনারের গন্তব্য বাংলাদেশ বলে অভিযোগ উঠলেও শিপিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টরা তা মানতে নারাজ।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, ‘রফতানির ভলিউম বেশি হওয়ার কারণেই কিন্তু আমরা খালি কনটেইনারগুলো নিয়ে আসছি।’
রফতানি বাড়ার কথা উল্লেখ করে সাইফ মেরিটাইম লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার আবদুল্লাহ জহির বলেন, ‘আমরা আমদানি থেকে খালি কনটেইনার ওভাবে পাবো না বিধায় খালি কনটেইনারগুলো রিজার্ভ করে রাখছি।’
উল্লেখ্য, বিশ্বখ্যাত অন্তত ১২টি প্রতিষ্ঠানের কনটেইনারের মাধ্যমে পণ্য আমদানি ও রফতানি করছে বাংলাদেশ। রফতানি পণ্যের জন্য জাহাজে করেই খালি কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসা হয়। সূত্র : সময় সংবাদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।