জুমবাংলা ডেস্ক: সরকারের বেঁধে দেওয়া নানা শর্তে সঞ্চয়পত্রের বিক্রির পরিমাণ এখন তলানিতে নেমে এসেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৭৩৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। সেই হিসাবে আগের বছরের তুলনায় সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছে ৭২ শতাংশ।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সঞ্চয় অধিদপ্তর মনে করে, বিক্রির ক্ষেত্রে শর্তারোপ করার কারণে অনেকেই সহজেই কিনতে পারছে না। এক্ষেত্রে কর সনাক্তকরণ নম্বর, টিআইএন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করা, মুনাফায় উৎস কর বৃদ্ধি এবং অপ্রদর্শিত অর্থে কেনা প্রতিরোধ করাসহ নানা রকম কড়াকড়ি আরোপে প্রতি মাসেই কমছে বিক্রি।
অন্যদিকে, করোনায় মহামারি আশংকা এবং আয়ের পথ সংকুচিত ও ব্যয় বেড়ে যাবার কারণে সঞ্চয়পত্রে টাকা জমা রাখা কমিয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ। ফলে চলতি অর্থবছরের বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ হবে না বলেই মনে করছে এই অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন পক্ষের দাবিতে সঞ্চয়পত্রের সুদহার না কমিয়ে এ খাতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এতে আশংকাজনক হারে কমছে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি। আর বর্তমান করোনা মহামারির কারণে মানুষের হাতে টাকা নেই। কর্ম হারিয়ে বেকায়দায় দেশের লাখ লাখ মানুষ। সঞ্চয় ভেঙ্গে জীবীকা নির্বাহ করছে অনেকেই। এমন অবস্থায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়ার সুযোগ নেই। আর এই খাতে যদি বিক্রি কমে, তাহলে সরকারের বাজেটে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণ আরও কঠিন হবে। আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে এই খাত থেকে সরকার যে ঋণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তা পূরণ না হলে অর্থায়ন সংকট আরও তীব্র হবে। রাজস্ব আদায়ে স্মরণকালের মন্দা, ব্যাংক ঋণের ঝুঁকি, বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ এবং অনুদানে অনিশ্চয়তায় কঠিন অবস্থায় সরকার। এমন অবস্থায় সঞ্চয়পত্র থেকে যদি ঋণ কমে যায় তখন হয়তো বড় আকারে বাজেট কাঁটছাট করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকের তুলনায় সুদহার বেশি হওয়ায় এবং কোন ধরনের ঝুঁকি না থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এতোদিন এই খাতেই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ কওে আসছিলেন। কিন্তু গত অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগে সুদেও হার না কমালেও বেশকিছু কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। এতে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগের এই আস্থার জায়গাটিও আর থাকলো না। এর ফলে সরকারের সুদ পরিশোধের দায় হয়তো কমেছে, কন্তিু যারা এই আয়ের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন, তারা হয়তো মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান করোনাকালীন সময়ে মানুষের আয় অনেক কমে গেছে। অধিকাংশ মানুষ সঞ্চয় ভেঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করছে। ফলে ভবিষ্যতে এই বিনিয়োগের হার হয়তো আরো কমে যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।