আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। বাঁচার তাগিদে রাফা শহরে ভিড় করেছেন ফিলিস্তিনিরা। এবার মাত্র ১৫১ বর্গকিলোমিটার এলাকার এই অঞ্চলটিতে হামলার পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে বলেছে, জনাকীর্ণ শহরটিতে ইসরাইল বড় মাত্রার অভিযান চালালে তা বিপর্যয়কর হবে। খবর আলজাজিরার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফাকে আগে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বলে আখ্যা দিয়েছিল ইসরাইল। সেখানে এখন প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি রয়েছে। কিন্তু সেখানেও বিমান হামলা এবং ট্যাংক থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এমনকি সেখানে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়ার খবরও জানা গেছে।
এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা এলো, ঠিক একই সময়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দার অর্ধেকের বেশি এখন রাফাহ শহরে ভিড় করেছেন। কারণ কোথাও তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। এমনকি বাস্তুচ্যুত এই মানুষদের শুধু ‘ঘর নেই’ তা-ই নয়, তাদের কোনো ‘আশাও নেই’।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালের বাইরে ইসরাইলি স্নাইপারের আঘাতে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেন, গাজায় চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ৩৪০ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে ৯৯ জনকে। আর অন্তত ১২৩টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস করেছে ইসরাইল।
সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ হাজারে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে টানা চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৯৪৭। এ ছাড়া এই সময়ে ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬৭ হাজার ৪৫৯ জন।
হামাসনিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এই আপডেট দেওয়ার আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০৭ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৪২ জন। তবে হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে কতজন বেসামরিক আর কতজন হামাসের সদস্য, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ‘অক্লান্তভাবে’ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরাইলকে কড়া ধমকও দিয়েছেন তিনি। বাইডেন বলেছেন, হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে যে হামলা চালিয়েছে, তার জবাবে দেশটি গাজায় যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনও বলেছিলেন, গাজাবাসীকে অমানবিক অবস্থায় ঠেলে দেওয়ার লাইসেন্স ইসরাইলের নেই।
বাইডেন বলেছেন, তিনি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি পেতে ইসরাইলকে কঠোরভাবে চাপ দিচ্ছেন। এ ছাড়া হামাসের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করতেও সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।