আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘কালো তালিকাভুক্ত’ কোনো যাত্রী ওমানে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, তাদের কেউ দেশটিতে শনাক্ত হলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এখন থেকে কেউ কর্মী ভিসায় ওমানে যেতে চাইলে তাকে অবশ্যই ফিরতি টিকিট কেটে দেশটিতে প্রবেশ করতে হবে।
গতকাল ওমানে বিমান বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ইরতেজা কামাল স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এসব তথ্য জানানো হয়। নোটিশে বলা হয়, কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের কয়েকজন কালো তালিকাভুক্ত যাত্রী শনাক্ত হয়েছেন, যারা ওমানে আসছেন বা ফেরত যাচ্ছেন। নতুন চাকরির ভিসা নিয়ে তারা মাসকট বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করছেন।
কালো তালিকাভুক্ত ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পাঁচ ধরনের শাস্তির বিষয় উল্লেখ করে বিমানের নোটিশে বলা হয়েছে :
১. গালফ কো-অপরেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) কোনো দেশে কালো তালিকায় থাকা কোনো ব্যক্তি ওমানে ঢুকতে পারবে না।
২. যারা ইতিপূর্বে সাধারণ ক্ষমা (আউট পাস) নিয়ে দেশে গেছে, তারাও পুনরায় ওমান ঢুকতে পারবে না।
৩. ওমান পুলিশ স্টেশনে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তারা দেশটিতে ঢুকতে পারবেন না।
৪. যদি কেউ অবৈধ উপায়ে ওমান থেকে বের হয়ে থাকেন, তারা দেশটিতে ওমান ঢুকতে পারবেন না।
৫. আরবাব (মালিক) যদি কোনো কারণে কাউকে কালো তালিকায় ফেলে, তাহলে কেউ আর ওমানে প্রবেশ করতে পারবে না।
নোটিশে আরও বলা হয়, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য কোনো ব্যক্তি যদি জিসিসিভুক্ত কোনো দেশের কালো তালিকায় থাকেন, তাহলে আর ওমান ঢুকতে পারবেন না। সে অনুযায়ী, এখন থেকে জিসিসিভুক্ত সৌদি, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, দুবাই ও ইরাক-এই সাতটি দেশের যে কোনোটিতে কেউ উপরের একটি অপরাধে জড়িত থাকেন, তাহলে তিনি আর ওমান প্রবেশ করতে পারবেন না।
ওমানে আসার পর বিভিন্ন সময় কিছু ব্যক্তি অপরাধ করে পালিয়ে দেশে চলে যায়। আবার অনেকের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় দুবাই হয়ে তারা দেশে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে কয়েক বছর পর পাসপোর্টের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে পুনরায় ওমান প্রবেশের সময় অনেকেই বিমানবন্দর পুলিশের হাতে আটক হন। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে।
ওমানের অভিবাসন নীতি অনুযায়ী, কালো তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি শনাক্ত হলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কোনোভাবে এর ব্যত্যয় ঘটলে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, সে অনুযায়ী কালো তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি ওমানে আসলে তাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। শাস্তি অনুযায়ী ওই ব্যক্তির প্রত্যাবাসনসহ যাবতীয় খরচ তার এজেন্টকে বহন করতে হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নোটিশে আরও বলা হয়, এসব কারণে এজেন্টদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, কর্মী ভিসায় আসতে চাওয়া ব্যক্তিদের কাগজপত্র যেন ভালোভাবে দেখা হয়। একই সঙ্গে তাদের ফিরতি টিকিটও যেন কেটে দেওয়া হয়। সম্পৃক্ত সবাইকে বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাতে বলা হচ্ছে। শাস্তি এড়াতে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব ওমানের প্রেসিডেন্ট সিরাজুল হক দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘কোনো ওমানি স্পন্সর যদি কারও কাজের পতাকা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দেন, তাহেল দুই বছর পর তিনি আবারও দেশটিতে যেতে পারবেন। তবে যে পাঁচ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, কোনো ব্যক্তি সেগুলোর আওতাভুক্ত থাকতে পারবেন না।’
উদাহরণ হিসেবে সিরাজুল হক বলেন, ‘যদি কারও বিরুদ্ধে মামলা না থাকে তবে তিনি পুনরায় ওমানে যেতে পারবেন।’
এ বিষয়ে জানতে ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত গোলাম সরওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।