কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী ব্যস্ত বিজ্ঞাপন সংগ্রহে!

Hh3RzpcNQX4x2tpaF4SjUS4lxhYUDAKYNaeBVjnR

আবুল কালাম আজাদ, ইউএনবি: চাকরি করেন কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার হিসেবে। কিন্তু অফিস ফাঁকি দিয়ে ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা পত্রিকার বিজ্ঞাপন সংগ্রহে। এমনই অভিযোগ রয়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের উত্তর বেলাই কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, মোহাম্মদ আলী সরকারি ওষুধ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের পাশাপাশি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালন না করে সাংবাদিকতা ও বগুড়া শহরের বিভিন্ন অফিস-আদালতে পত্রিকার বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে বেড়ান। তিনি তিনটি দৈনিকের বিজ্ঞাপন সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ করেন।

শহরের বিভিন্ন অফিসে গিয়ে গ্রামবাসীর এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

কমিউনিটি ক্লিনিকটিতে মোহাম্মদ আলী ছাড়াও আজহার আলী স্বাস্থ্য সহকারী, মিম আক্তার পরিবার পরিকল্পনা সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন এবং তাদের ব্যবস্থাপনায় একজন আয়া খণ্ডকালীন চাকরি করেন।

গত ৪ নভেম্বর দুপুরের দিকে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।

উত্তর বেলাই গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজালাল বলেন, তারা ভালো স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ ঠিকমতো পান না। স্বাস্থ্যকর্মী মোহাম্মদ আলী সকাল ১০টায় এসে দুপুর ১২টার মধ্যেই চলে যান।

ক্লিনিকের পাশের বাসিন্দা খায়রুল আলমও একই তথ্য জানিয়ে বলেন, আজহার আলী ও মিম আক্তার সপ্তাহে তিন দিন আসেন।

স্থানীয় ইলিয়াস হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘আমরা যদি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা না পাই তাহলে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর কোনো প্রয়োজন নেই। তাকে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেয়া হোক।’

আরেক বাসিন্দা বাদশা আলম বলেন, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত থাকার কথা থাকলেও ক্লিনিকের লোকজন এক-দেড় ঘণ্টা থেকে ক্লিনিক বন্ধ করে চলে যান।

কর্মীদের দেরিতে আসা ও আগে যাওয়ার কথা স্বীকার করে ক্লিনিকের আয়া সাহেরা বেওয়া জানান, তিনি মাসে ৩০০ টাকার ভিত্তিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। ওষুধপত্র তার হেফাজতে থাকে। স্বাস্থ্যকর্মীরা আসলে তিনি ওষুধ বের করে দেন।

এ ব্যাপারে মোহাম্মদ আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে দেখা করতে চান।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তারক নাথ কুন্ডু বলেন, ‘অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। একজন সরকারি কর্মচারীর কোনোভাবেই সাংবাদিকতা অথবা অন্য কোনো পেশার সাথে জড়িত থাকার সুযোগ নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন এবং কমিউনিটি ক্লিনিক সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন। ‘সরকারি বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বগুড়ার সিভিল সার্জন গওসুল আজিম চৌধুরী বলেন, ‘অফিসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে থাকতে হবে। কোনো কারণে ক্লিনিকে থাকতে না পারলে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে ছুটি নেয়া যায়। কিন্তু কোনোভাবেই ক্লিনিক বন্ধ রাখা যাবে না। আর সরকারি চাকরি করা কেউ অন্য কোনো পেশায় থাকতে পারবেন না। উত্তর বেলাই কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সূত্র: ইউএনবি

Write a Comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *