আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের মহামারিতে বয়স্কদের মৃত্যু এবং মারাত্মক শারীরিক অসুস্থতার ঝুঁকির বিষয়টি এখন বেশ পরিষ্কার। দেশে দেশে বিপুল সংখ্যক প্রবীণ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সরকারগুলি জনগণকে তাদের বৃদ্ধ বাবা-মা ও দাদি-দাদাদের সবচেয়ে সুরক্ষিত এবং তাদের বাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা নিশ্চিত করার জন্য বলেছে।
অবশেষে বয়স্কদের জন্য করোনাভাইরাস বেশি মারাত্মক হওয়ার কারণ যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কার্ডিওভাসকুলার এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত মানুষেরা প্রতিদিন বিভিন্ন মেডিসিন গ্রহণ করে। এসব ওষুধের উপাদানগুলির কারণে ভাইরাস আরও সংহত হয় এবং গুরুতর সমস্যার দিকে পরিচালিত করে।
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেডিসিনের কারণে এনজিওটেনসিন-রূপান্তরকারী এনজাইম ইনহিবিটরস (এসিইআই) এবং অ্যাঞ্জিওটেনসিন রিসেপ্টর ব্লকারস (এআরবি) তৈরি বাঁধা পড়ায় সার্স বিটা করোনাভাইরাস বয়স্ক মানুষের জন্য বেশি ঝুকি তৈরি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির (এলএসইউ) অধ্যাপক ড. জেমস ডিয়াজ বলেন,সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিরা এই জাতীয় রোগে বেশি সংখ্যায় ভোগেন। গবেষণায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে ভাইরাসের আক্রমণে প্রবীণ ব্যক্তিরা কেন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অসহায়। তিনি আরও যোগ করেছেন যেহেতু এই ওষুধগুলি প্রতিদিন খাওয়া হয় তাই বয়স্কদের ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়।
গবেষণার অংশ হিসাবে,চীনের ১ হাজার ৯৯ জন করোনা রোগীর ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। যারা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গবেষণায় দেখা গেছে,যাদের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছিল তাদের সবাই এই সমস্ত রোগে ভুগছিলেন এবং এসিইআইএস এবং এআরবির মতো উপাদান রয়েছে এমন ওষুধ সেবন করেছেন।
গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস এবং তাদের ওষুধে পাওয়া যায় এমন বিপজ্জনক পদার্থ এড়াতে সর্বোত্তম সতর্কতা হলো ভিড়ের জায়গা, গণ-অনুষ্ঠান, সমুদ্র ভ্রমণ এবং দীর্ঘকালীন বিমান ভ্রমণ এড়ানো।
ডায়াজ বলেছিলেন যে, এই ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন এমন বেশিরভাগ রোগীরই তাদের গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ ছাড়া বেঁচে থাকার আশা করা যায় না। এই জন্য তাদের বাড়তি সতর্কতা বেশি প্রয়োজন।
মানুষের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এ কারণে যেকোনও ধরনের সংক্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন বয়স্করা। শরীরে কোনও ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হলে তা অধিকাংশ সময় ক্ষতি করে। বয়স্কদের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে তার সঙ্গে লড়াই করে উঠতে পারে না রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এসময় শরীরে এক ধরনের আলোড়ন তৈরি হয়; যা সংক্রমণের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় অতিরিক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল উৎপাদন করে। অতিরিক্ত লড়াই চালাতে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন ধরনের অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিকল হয়ে যায়। যে কারণে তা বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা তৈরি করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।