ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে ইসরাইল হোসেন (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। গত ৪/৫ দিন ধরে তিনি জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শনিবার রাত ৯ টার দিকে সে মারা যায়। মৃত ইসরাইল হোসেন উপজেলার জামাল ইউনিয়নের খানজাপুর গ্রামের মৃত অকিল উদ্দীনের ছেলে।
মৃত ইসরাইল হোসেনের জামাই কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া নদীপাড়া এলাকার বোরহান উদ্দিন জানান, তার শ্বশুর গত ৪/৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। এছাড়া তার সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল। গত শুক্রবার বিকেলে ইসরাইল হোসেন জামাইয়ের বাড়িতে আসে। শনিবার রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এসময় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
করোনা আক্রান্তের প্রায় সকল উপসর্গই ছিল ইসরাইল হোসেনের। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হাসপাতালে নেওযার পথে সে মারা যায। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহ করেন এবং রোববার সকালে পরিবারের স্বজনদের কাছে মরাদেহ হস্তান্তর করে।
জানা যায়, মৃতদেহের দাফন ও কাফনের ব্যবস্থা করেন কালীগঞ্জ উপজেলার ৬ আলেম। হাসপাতাল থেকেই মরদেহের গোসল করানো হয। এরপর তাদের মাধ্যমে একটি সিএনজিতে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত ব্যক্তি ইসরাইল হোসেনের গ্রাম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের খানজাপুর গ্রামে।
বাংলাদেশ মাধ্যমিক জাতীয় ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন উল্লাপাড়ার ইয়ামিন আহমেদ ≣ নির্বাচন পেছাতে ২৫ জানুয়ারি দেশব্যাপী অবরোধের ডাক দিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ≣ চট্টগ্রামে করোনা নিয়ে গুজব ছড়ানোয় আটক ১
এসময় জানাযা পড়ানোর জন্য আলেমদের পক্ষ থেকে গ্রামের মসজিদের খাটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা খাটিয়া দিতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মাটিতে রেখেই জানাযা সম্পন্ন করেন তারা। মরদেহের দাফন-কাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন, কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ঈমাম ফারুক নোমানী, মাওলানা রুহুল আমিন, হাফেজ হেদাযাতুল্লাহ, মাওলানা ইযাসিন, মাওলানা আতাউর রহমান ও হাফেজ শাহ জালাল।
ঈমাম ফারুক নোমানী জানান, জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য গ্রামবাসীর কাছে মসজিদের খাঁটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা সেটা দিতে অস্বীকার করে। পরে মরদেহ মাটিতে রেখেই জানাযা নামাজ সম্পন্ন করে লাশ দাফন করা হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনা মৃত ব্যক্তির সাথে থাকা স্বজনদের বরাত দিয়ে বলেন, চারদিন ধরে জ্বর ছিল। ঠান্ডা-কাশিও ছিল এবং তার গলাব্যথাও ছিল। আমাদের সাথে আগে থেকে সে কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। গত দুই দিন ধরে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। শনিবার রাত ৯ টার দিকে হাসপাতালে আনার পথে সে রাস্তার মধ্যে মারা গেছে।
তিনি আরো জানান, হাসপাতাল থেকেই মারা যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তার করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করি। নমুনা ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি। রিপোর্ট হাতে পেলে করোনা আক্রান্ত কিনা জানা যাবে। রোববার সকালে মৃত ব্যক্তির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃতদেহের লাশটি দাফনের জন্য ১০ জনের একটি টিম কাজ করছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া করোনা উপসর্গ নিয়ে ইসরাইল হোসেন নামের এক বৃদ্ধ মারা যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, মারা যাওয়ার পর তার লাশ নেওয়ার জন্য কোন গাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তেমন কোন লোকজন ছিল না। লাশ বাড়িতে পৌছিয়ে দেওয়া, জানাযা, দাফনসহ সবকিছুই কয়েকজন তরুন আলেম ও পুলিশ করেছে বলে তিনি দাবি করেন। পুুলিশের সাথে একজন ডাক্তার, একজন মসজিদের ইমাম ও মৃত ব্যক্তির এক ছেলে ছিল। সকালে গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার সকালে বাড়ি দুটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা জানান, মৃত ইসরাইল হোসেনের গ্রামের বাড়ি জামাল ইউনিয়নের খানজাপুর গ্রামের বাড়ি ও শহরের আড়পাড়া নদীপাড়া এলাকায় জামাই বোরহান উদ্দিনের বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।