লাইফস্টাইল ডেস্ক: গোটা বিশ্বে এখনও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে এরই মধ্যে সংক্রামিত হয়েছেন দুই কোটিরও বেশি মানুষ।
তবে সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুস্থ হওয়ার পরও অনেকে আবার করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যদিও এই সংখ্যাটা খুবই কম, তবে নিজেদের অসতর্কতার কারণেই অনেকে দ্বিতীয়বার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন ।
এজন্য এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরও রোগীকে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও কিছু সমস্যা থেকেই যায়।
কারও কারও কিছু দীর্ঘমেয়াদি সমস্যারও মুখোমুখি হতে হয় । যেমন – ক্লান্তি, মাথাব্যথা, মানসিক সমস্যা, কিডনি, ফুসফুস এবং হৃদরোগজনিত অসুস্থতা ইত্যাদি।
এ কারণে করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরও নিজেকে একেবারে ফিট করে তুলতে কয়েকটি বিষয়ের উপরে বিশেষ নজর দিতে হবে। যেমন-
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর নিজেকে হোম আইসোলেশনে রাখুন। বিশেষজ্ঞদের দেওয়া সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলুন। মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোওয়া, বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের থেকে কিছুদিন দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি অবশ্যই মানতে হবে।
রুটিন তৈরি করা
সুস্থ হবার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত আগের জীবনে ফেরার চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। বাইরে বেরোনো, কাজে যোগ দেওয়া, বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে। মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে আরও সুস্থ ও ফিট হয়ে উঠতে নিজেকে সময় দিন। তার জন্য একটা রুটিন তৈরি করুন।।
শারীরিক লক্ষণগুলিতে মনোযোগ দিন
সেরে ওঠার পরেও যেহেতু কিছু ক্ষেত্রে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়, তাই হোম আইসোলেশনে থাকার সময় শারীরিক লক্ষণগুলির উপর বিশেষ নজর দিন। শারীরিক কোনও সমস্যা, যেমন – অল্প মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত দুর্বল ভাব, পুনরায় স্বাদ -গন্ধ চলে যাওয়া বা অন্যান্য কোনও লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা নয়
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর যেসব ওষুধ খাওয়ার কথা তা সময় মতো অবশ্যই খাবেন। যদি আগে থেকে কারও কোনও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা থেকে থাকে তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে সেই সব রোগের ওষুধও খাওয়া শুরু করতে হবে।
মানসিক দুর্বলতাকে কাটিয়ে তুলুন
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মানসিকভাবে বেশি দুর্বল হয়ে পড়ছেন। তাই সেরে ওঠার পর নিজেকে মানসিক দিক থেকে ফিট করে তুলুন। নিজের মন এবং মস্তিস্ককে সতেজ রাখতে মেডিটেশন বা ধ্যান করুন।
সুষম আহার ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মানসিক দুর্বলতার পাশাপাশি শারীরিকভাবেও অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই নিজের শক্তিকে পুনরায় সঞ্চয় করতে এবং ফিট হয়ে উঠতে বাড়িতে তৈরি ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। কী ধরনের ডায়েট মেনে চলবেন সে সম্পর্কে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
একাকীত্ব দূর করা
হোম আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিরা একাকিত্বে ভুগতে থাকেন। এ কারণে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে একাকীত্ব বোধ দূর করুন। নিজের ঘরে থেকেই, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলুন, সময় কাটান। নিজের পছন্দসই বই পড়ুন, সিনেমা দেখুন, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন। দেখবেন মন অনেক হালকা লাগবে এবং খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
শরীরচর্চা
শারীরিক ও মানসিকভাবে শরীর সুস্থ করে তুলতে শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে অল্প অল্প করে ব্যায়াম শুরু করুন। তাহলে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে কোন ধরনের শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র: বোল্ড স্কাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।