জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই ভাইরাসটির সংক্রমণের হটস্পট ছিল নারায়ণগঞ্জ। কিন্তু গতকাল শনিবার (৩০ মে) নারায়ণগঞ্জকে পেছনে ফেলল চট্টগ্রাম।
এদিন চট্টগ্রামে ১২১৯টি নমুনা পরীক্ষায় আরও ২৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। যার ফলে সেখানে মোট করোনা আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ২৮৬৭ জনে। অন্যদিকে শনিবার পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ২৫৩২ জন।
আরও পড়ুন : গত ২৪ ঘন্টায় ২৫৪৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত, মোট ৪৭,১৫৩
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের প্রায় একমাস পরে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামে। কিন্তু সংক্রমণ শুরুর প্রথম মাসে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দ্বিতীয় মাসে চট্টগ্রামে করোনার বিস্ফোরণ ঘটে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকা এখন চট্টগ্রাম। অনিয়ন্ত্রিত চলাচল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় উন্মুক্ত থাকার কারণে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের বিস্তার দ্রুত ঘটছে।
বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, ঈদের ছুটি শেষে মানুষ নগরে ফিরতে শুরু করায় এ পরিস্থিতির এখন আরও মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে।
গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় ৬৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তির শরীরে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ওই ব্যক্তি তার ওমরাফেরত মেয়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হন বলে ধারণা করা হয়। পরে ৫ এপ্রিল দ্বিতীয় করোনা রোগী শনাক্ত হন ওই ব্যক্তির ২৫ বছর বয়সী ছেলে। এর পরে এক-দুই করে নগরে করোনার পরিস্থিতি অবনতি হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন : গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যু
তবে গত ২৬ এপ্রিল থেকে পোশাক কারখানাগুলো চালুর সঙ্গে সঙ্গে নগরের অঘোষিত লকডাউন পরিস্থিতি ভেঙে পড়তে শুরু করে। এর পরে ধারণার চেয়ে দ্রুত গতিতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
শনিবার মধ্যরাতে প্রকাশিত রিপোর্টে জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডিতে তিনদিনের (২৪-২৬ মে) জমে থাকা ৮১৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ঢাকার আইইডিসিআর। এতে ১১৬ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ল্যাব বন্ধ থাকায় গত ৩ দিনের ৮১৬টি নমুনা পরীক্ষা করেছে ঢাকার আইইডিসিআর। এর মধ্যে ১১৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে নগরের ৬৭ জন ও উপজেলার ৪৩ জন। ৬ জনের ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৬০টি নমুনা পরীক্ষায় ১২০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে নগরীর ১১১ জন ও উপজেলার ৯ জন।
সিভাসুর ল্যাবে পরীক্ষা হয় ১৩৮ জনের নমুনা। এতে ৪২ জনের পজিটিভ ধরা পড়ে। এর মধ্যে মহানগরে ২ জন ও ৩৮ জন উপজেলার।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ (কমেক) ল্যাবে চট্টগ্রামের ৫টি নমুনা পরীক্ষায় একজনের করোনা পজিটিভ এসেছে। তিনি উপজেলার বাসিন্দা।
মোট আক্রান্ত ২৭৯ জনের মধ্যে মহানগরে ১৮০, বিভিন্ন উপজেলায় ৯১ জন। এর মধ্যে আট জন ঠিকানাবিহীন বলে জানায় জেলা সিভিল সার্জন।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৮৬৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৪ জন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন ২১৭ জন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।