চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: করোনা রোগী সন্দেহে হাসপাতাল থেকে এক বৃদ্ধাকে বের করে দেওয়া নগরীর মেহেদিবাগের ন্যাশনাল হাসপাতালের সেই পরিচালক ডা. আবু নাছের নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গতকাল (১ জুন) পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা এই চিকিৎসকের পরিবারে করোনা ধরা পড়েছে আরও দুজনের। এদের একজন ২৯ বছর বয়সী চিকিৎসক ও ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর। তবে ডা. নাছেরের স্ত্রীর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
জানা যায়, প্রায় দুমাস আগে জেলার সীতাকুণ্ড থেকে ন্যাশনাল হাসপাতালে আসা ৬৫ বছর বয়সী এক মহিলা জ্বর ও তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি হাসপাতালটির আইসিইউ ভর্তি ছিলেন। হঠাৎই ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের মনে হয় যে ওই মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। মুহূর্তেই হাসপাতালটির পরিচালক ডা. আবু নাছের এসে বৃদ্ধাকে বের করে দিলেন আইসিইউ থেকে। সাধারণ সিটে পড়ে থাকা ওই বৃদ্ধার কাছে ডাক্তার তো দূরের কথা একটা নার্স-আয়া পর্যন্ত যাননি। আইসিইউ থেকে বের করে দেওয়ার মাত্র একঘন্টার মধ্যে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর দিন সীতাকুণ্ডের বিশেষায়িত হাসপাতাল ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) থেকে আসা রিপোর্টে দেখা যায় ওই বৃদ্ধা মহিলা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না।
বৃদ্ধাকে করোনা সন্দেহে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে বের করে দিয়েছিলেন যে পরিচালক, মাত্র দুই মাসের মাথায় সেই পরিচালকই সপরিবারে আক্রান্ত হলেন করোনাভাইরাসে। শুধু তাই নয়, নিজের হাসপাতালেই তিনি আইসিইউতে থাকতে পারলেন না। চট্টগ্রাম থেকে পরিবারসহ চলে যেতে হচ্ছে ঢাকায়।
ন্যাশনাল হাসপাতালে আইসিইউ খালি থাকলেও তা পরিচালনা করার মতো চিকিৎসক ও নার্স নেই। ডা. আবু নাছের সপরিবারে চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ডা. আবু নাছেরের হার্টে একাধিক রিং পড়ানো আছে। যে কোন সময় তার আইসিইউ সাপোর্ট দরকার হতে পারে বলে জানান তার ঘনিষ্ঠজনরা।
ডা. আবু নাছের ঈদের আগে করোনা আক্রান্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেকের চিকিৎসা তদারকি করেছিলেন ন্যাশনাল হাসপাতালে। জাফর সাদেকের অবস্থার অবনতি ঘটার পর তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পর আবু নাছেরের শরীরে করোনা লক্ষণ প্রকাশ পায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।