মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে পৌরসভার আন্ধারমানিক, জয়নগর ও কান্দাপৌলি গ্রামের নদীপাড়ের অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলী জমি ভাঙণের মুখে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তবে প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কোনব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। স্থানীয়রা বলছেন, প্রভাবশালী একটি মহল এর সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রশাসন বরাবরই নীরব ভূমিকা পালন করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালীগঙ্গা নদীর জয়নগর এলাকায় বেশ কয়েকটি বলগেট বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদীর পাড়ের বহু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির অংশবিশেষ ভাঙনের মুখে।
জয়নগর গ্রামের মান্নান মিয়া বলেন, ‘নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সে কারণে নদীপাড়ের অসংখ্য বাড়িঘর, জমিসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে । আমরা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালাম বলেন, কালীগঙ্গা থেকে বালু উত্তোলনের কারণে আমার আড়াই বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক টাকার ব্যবসা এখানে আমি কিছু বলতে পারি না। কিছু বলতে গেলে প্রাণে মারার হুমকি আসে। গতকাল (শুক্রবার) এলাকাবাসী সেখানে গিয়েছিলেন তাতেই আমার উপর থেকে চাপ আসতেছে ।
এলাকাবাসী জানায়, বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য গ্রামের নারী-পুরুষ মিলে প্রতিবাদ জানাতে বলগেটের দিকে গেলে বলগেটের লোকজন কিছু সময়ের জন্য বলগেট সরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্ত এক-দেড় ঘন্টা পরই আবারো বলগেট নিয়ে এসে বালু উঠানো শুরু করে। গ্রামবাসী আরো জানায়, বলগেটের লোকজন উল্টো গ্রামবাসীকে পুলিশের ভয় দেখায়।
এদিকে, ইজারদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স শামিম এন্টারপ্রাইজ ও সরকার কর্পোরেশনের মালিক আফছার উদ্দিন সরকার ও শামিম হোসেনের এর প্রতিনিধি সম্রাট বলেন, তারা বালুমহালের ইজারা নিয়ে নিয়ম মেনেই নদী থেকে বালু-মাটি উত্তোলন করছেন। তাদের বালু-মাটি উত্তোলনের করণে নদীতে ভাঙ্গন হয়না। নদী ভাঙ্গন আল্লাহর দেওয়া একটা সাধারণ ব্যাপার। তিনি গ্রামবাসীকে অভিযুক্ত করে বলেন, গ্রামের লোকজন শুধু শুধু তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি, টেটা, ছ্যান নিয়ে হামলা চালিয়েছে। তবে এব্যাপারে কোথাও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি বলেও জানান তিনি।
মেসার্স শামীম এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধীকারী মোঃ শামীম বলেন, বালুমহালের ইজারা আমার নামে থাকলেও আমি কখনো ওখানে যাইনি। ওটা দেখাশুনা করেন আফছার উদ্দিন সরকার। ওইখানে আমার কোন ড্রেজার বা বলগেট নাই। এদিকে আফসার উদ্দিন সরকারের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে কেউ নদী থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।