জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের মুদ্রাবাজারে ডলারের তেজ কিছুটা কমেছে। সোমবার (১ আগস্ট) আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের দাম ১ টাকা কমে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রবিবারও (৩১ জুলাই) ব্যাংগুলোতে এ দরে ডলার বিক্রি হয়। গত বৃহস্পতিবার যা ছিল ১০৮ টাকা।
কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলারের মূল্য ১ টাকা হ্রাস পেয়ে ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকালও খোলাবাজারে এ দামে ডলার বিক্রি হয়। গত বৃহস্পতিবার যা ছিল ১০৯ টাকা। এর আগে মঙ্গলবার ডলারের দর সর্বোচ্চ ১১২ টাকায় ওঠে।
আজ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংক ১০২ টাকা দরে নগদ ডলার বিক্রি করছে। তবে বেসরকারি ইস্টার্ন ও সিটি ব্যাংক প্রতি ডলারের জন্য নিচ্ছে ১০৭ টাকা।
গত কয়েক দিনের মতো এদিনও ব্যাংকগুলোর কাছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায় এক ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একে আন্তব্যাংক হার (ইন্টারব্যাংক রেট) বলা হচ্ছে।
তবে এখনও এ দরের চেয়ে ৬ থেকে ১২ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) সংগ্রহ করছে ১০৪ থেকে ১০৫ টাকায়। আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খুলতেও ১০৪ থেকে ১০৫ টাকা নিচ্ছে তারা।
মুদ্রবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে গত বুধবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্যদের নিয়ে এ কার্যক্রম চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
একইসঙ্গে অবৈধভাবে ডলার মজুতকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। মূলত এতেই তেজ কমে ডলারের দাম স্থির হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। দিন দিন রেমিট্যান্স বাড়ছে। সেই সঙ্গে আমদানি কমছে। আশা করি, শিগগিরই বাজার স্বাভাবিক হবে।
এদিন রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় খোলাবাজারে কোনো ডলার কেনাবেচা হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে তা লেনদেনে ভয় পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কার্ব মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, আতঙ্কে দুই দিন ধরে বাসা থেকে বেরই হতে পারিনি। এ মুহূর্তে কোনো ব্যবসায়ীই ডলার কেনাবেচা করছে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী পণ্য আমদানি মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে দেশের মুদ্রাবাজারে। এতে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। ফলে দেশে প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রা সরবরাহ সঙ্কট দেখা দেয়।
পরিপ্রেক্ষিতে ডলার সরবরাহে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়। অস্থির বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে সরকার। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবু কাজ হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত অভিযানে নামে তারা।
উল্লেখ্য, এক বছরে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর ব্যাংক ও খেলাবাজারে বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।