মো. শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে সরকারের চাল সংগ্রহ অভিযানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চাল সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধনের দিনেই চুক্তিবদ্ধ মিল চাতাল মালিকরা চাতালে চাল উৎপাদন না করে বাইরে থেকে নিম্নমানের চাল এনে তা গুদামজাত করা হচ্ছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী চুক্তিবদ্ধ মিল মালিকদের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে ধান সংগ্রহ করে সেই ধান থেকে চাল উৎপাদন করে সরকারী গোডাউনে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু মিল চাতাল মালিকরা তা না করে উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকতার্ মহসীন আলীকে ম্যানেজ করে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার মাহবুব অটো হাস্কিং মিল থেকে ট্রাকে করে চাল এনে চুক্তিবদ্ধ মিলারদের নামে গুদামজাত করছেন।
এছাড়াও মান পরীক্ষা করে প্রত্যায়নসহ খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহের বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। ফলে এ উপজেলার কৃষকরা সরকারের কাছ থেকে ধান চাল বিক্রির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। লাভবান হচ্ছে সরকারের অসাধু কর্মকতার্সহ গুটিকয়েক মানুষ।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাযার্লয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সরকারীভাবে চুক্তিবদ্ধ ৩০ টি মিল চাতাল মালিকদের সাথে নিজ চাতাল হতে উৎপাদন সাপেক্ষে ৪শত ৪৬ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের বরাদ্দ প্রদান করা হয়। যা ৩৬ টাকা কেজি দরে গত ১২ জানুয়ারী থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চাল সংগ্রহ অভিযান চলমান থাকবে। কিন্তু মিল চাতাল মালিকরা সরকারের চুক্তি ভঙ্গ করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উদ্ধোধনের দিন থেকে বাইরে থেকে চাল এনে নিজ নামে গুদামজান করছে।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকতার্র কাযার্লয় সূত্রে জানা গেছে, চাল সংগ্রহের উদ্ধোধনের দিনেই বাইরে থেকে ট্রাকে করে চাল এনে সিয়াম রাইস মিলের নামে ৫.০৪০ মেট্রিকঁন, তারিক রাইস মিলের নামে ১০.২০০ মেট্রিকঁন, ফিরোজ রাইস মিলের নামে ১০.২০০ মেট্রিকঁন, জাহাঙ্গীর রাইসমিলের নামে ১৫.৯৬০ মেট্রিকঁন। এবং ১৩ জানয়ারী ময়না রাইস মিলের নামে ১০.৯২০ মেট্রিকঁন, এজেএস রাইস মিলের নামে ৫.১০০ মেট্রিকঁটন, সিয়াম রাইস মিলের নামে ১২.৬০০, জাহাঙ্গীর রাইস মিলের নামে ৮.৪০০ এবং ১৪ জানয়ারী সর্বশেষ ২১ টন মাল গুদামজাত করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সরজমিনে চুক্তিবদ্ধ মিল চাতাল তারেক রাইস মিল, এজেএস রাইস মিল, সিয়াম রাইস মিল ও ময়না রাইস মিলে গিয়ে দেখা যায়, সবকটি মিলের চুলা দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ। চাতালে নিযুক্ত শ্রমিকরা বেকার বসে থেকে অলস সময় কাটাচ্ছে। তবে কয়েকটি চাতালে চলতি আমন ধান বস্তায় প্যাকেট করা হচ্ছে। এসময় কয়েকজন শ্রমিক জানান, বর্তমানে মিল চাতাল মালিকরা লটারীর মাধ্যমে নিবার্চিত কৃষকদের ভুর্তকি কার্ড কিনে নিয়েছেন। ওই কৃষকদের নামে ধান গুডাউনে ঢুকানো হচ্ছে ।
উপজেলা মিল চাতাল মালিক সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম বাহির থেকে চাল আনার কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের মিল থেকে চাল উৎপাদন করলে চালের মান ভাল হয় না, তাই বাহির থেকে নিয়ে আসি।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকতার্ মহসীন আলী জুমবাংলাকে বলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সটার মেশিন না থাকার কারণে মিলাররা বাইরে থেকে চাল সটার করে নিয়ে আসছে। এটা অনিয়মের মধ্যে পরে না।
উপজেলা খাদ্য কর্মকতার্ অতিরিক্ত দায়িত্ব মাহমুদ হাসান জুমবাংলাকে বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী ধান চাল সংগ্রহ অভিযান চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য কর্মকতার্ কাজী সাইফুদ্দিন ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জুমবাংলাকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা খাদ্য কর্মকতার্র সাথে কথা বলে ব্যাবস্থা নেব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।