কীভাবে ওজন হ্রাস করবেন?
ডায়েট এবং ওজন হ্রাস কী?
ডায়েট (Diet):
একজন ব্যক্তির ডায়েট হ’ল, তার অভ্যাসগত ভাবে গ্রহণ করা খাবার ও পানীয়ের যোগফল।
ওয়েট লস (Weight loss):
ওয়েল লস বা ওজন হ্রাস হলো, যখন কোনও ব্যক্তির ওজন আগের চেয়ে কম হয়। কোনও ব্যক্তি ডায়েট, শারীরিক ব্যায়ম বা অন্য কোনও কার্যকলাপ করে ওজন হ্রাস করতে পারে।
উল্লেখ্য:
ডায়েটিং (Dieting):
ডায়েটিং হ’ল ডায়েটের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ওজন অর্জন বা বজায় রাখার চেষ্টা করার অভ্যাস।
ওজন ওজন হ্রাস করার উপায় কী?
বর্তমানে আমাদের সমস্যাবলির মাঝে ওজন বেড়ে যাওয়া একটি উল্লেখিত সমস্যা। অনেকের প্রশ্ন, কীভাবে ওজন হ্রাস করবেন? যা নিয়ে আমরা সবাই কম-বেশী চিন্তিত! এর প্রধান কারণ হল আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমগুলির ভারসাম্য ঠিক না থাকার ফলে। বেশি কিছু না আমরা কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করলেই আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
১) ঘুমঃ পর্যাপ্ত ঘুম ঘুমালেই সব কিছু ঠিক হবে তা নয় কিন্তু ! ঘুমের জন্যে নির্দিষ্ট সময় থাকে। যা হল রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা অব্দি। এই ৮ ঘন্টা ঘুম আমাদের খুব প্রয়োজনীয় একটা জিনিস। বর্তমানে আমরা অনেকেই রাত জেগে থাকি। রাত জাগে থাকার পর যদি দিনের বেলায় ৮ ঘন্টা ঘুমানো হয় তবে তাতে কোন ধরনের উপকার হয় না! বরং মস্তিষ্ক এবং আমাদের শরীরের জন্যে এই রাতজাগা খুব খারাপ প্রভাব ফেলে থাকে। পাশাপাশি দুপুরে খাবার খাওয়ার পর পর আমরা অনেকেই ঘুময়ে থাকি। যা আমাদের দেহের ওজন বৃদ্ধি করে থাকে।
২) খাদ্যঃ ৬টি উপাদান নিয়ে খাদ্য তালিকা গঠিত। যথাঃ শর্করা, আমিষ, স্নেহ বা তেল, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানি। আমাদের সুস্থ থাকার জন্যে দৈনন্দিন জীবনে উল্লেখযোগ্য এই খাদ্যগুলি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা খাদ্য গ্রহণ করব পরিমিত। খাদ্য গ্রহণে যেমন আমরা সুস্থ থাকব তেমনি অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণে আমাদের শরীরের জন্যে ক্ষতি! বিশেষ করে স্নেহ বা তেলযুক্ত খাদ্য কম গ্রহণ করব। কেননা, স্নেহ বা তেলযুক্ত খাদ্য পাশাপাশি অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণে আমাদের দেহে অনাখাঙ্কিত চর্বি তৈরী হয়। যা আমাদের দেহের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
৩) শারীরিক অনুশীলনঃ অতিরিক্ত ওজন কমাতে পরিমিত খাদ্যে এবং ঘুমের পাশাপাশি শারীরিক অনুশীলন খুবই বেশী প্রয়োজন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে শারীরিক অনুশীলনের নিয়মগুলো মেনে অনুশীলন সর্বদা করে যেতে হবে। শারীরিক অনুশীলনের উপযুক্ত সময় হল ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠার পর ১ থেকে ২ ঘন্টা এবং বিকেলে ১ থেকে ২ ঘন্টা। যা আমাদের ওজন কমাতে সহায়তা করবে এবং শরীর ও মন সুস্থ রাখবে।
৪) পানিঃ পানির অপর নাম জীবন এ কথাটি আমরা সবাই জানি। সত্যিকার অর্থে পানি এমন একটি প্রয়োজনীয় উপাদান, যা ছাড়া আমাদের জীবন চলা অসম্ভব! আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে কমপক্ষে ৮ লিটার পানি গ্রহণ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গরম পানি খুব ভাল ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ গরম পানি আমাদের দেহে কোন চর্বি জমতে দেয় না। পাশাপাশি চর্বি কমাতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও গরম পানি আমাদের দেহের অনেক প্রকারের সাহায্য করে থাকে।
ডায়েট কন্ট্রোল শব্দটি আগে খুব শুনতাম। হিন্দি সিনেমা দেখে মধ্যবিত্তের মেয়েরা মোটা হতে চাইতো না। তখন প্রা্য়ই এই শব্দটি শোনা যেত। আর মটকুদের দামও কমে গিয়েছিল বিয়ের বাজারে। আসলে ডায়েট কন্ট্রোলের পক্ষপাতি আমি না। চর্বি জাতীয় খাবারটি আপনি কম খেতে পারেন। শাক সবজি বেশি খেয়ে শর্করাও একটু কম খেতে পারেন। কিন্তু খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়ার দরকার নেই। বেশি বেশি সবজি খান। লো ক্যালরির ফুড যেমন শশা বেশি করে খান। এক বাটি বাধাকপি বা ফুলকপি খান। খেয়ে খেয়ে ওজন কমান। টক দইয়ের সঙ্গে জিরা মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে অনেকের ওজন কমে। সবার একই প্রশ্ন, কীভাবে ওজন হ্রাস করবেন?
এছাড়া লেবু পানি, গ্রিন টি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যেসব খাবারে আমিষ এবং আঁশ পাওয়া যায় সেইসব খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। ফল, সবজি, বাদাম এবং দই ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ডিম একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার এবং এতে ওজন কমে। যারা সকালবেলা ডিম খায় তাদের সহজে খিদে পায় না এবং ওজন কমে। ছোট একটি গবেষণায় এই কথা প্রমাণিত হয়েছে।
ওটমিল খেলেও মানুষের কম খিদে পায় বলে গবেষণায় দেখা গেছে। মটরশুটি, সীম, ডাল ইত্যাদি খেলে ওজন কমে। এছাড়া অ্যাভোকাডো এবং বাদাম ওজন কমাতে সাহায্য করে।
যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তবে বলবো লো কারবোহাইড্রেট হাই ফ্যাট অর্থাৎ কিটোজেনিক ডায়েট ফলো করার জন্য। এর থেকে ফাস্ট আর ইফেক্টিভ ডায়েট আর কোন কিছু হয় বলে আমার মনে হয় না। অন্য সব ক্রাশ ডায়েট থেকে এই ডায়েট ফলো করা অনেক সহজ এবং এর অনেক উপকারিতা রয়েছে।
আমাদের শরীর দুই ধরণের ফুয়েল বা জ্বালানি ব্যবহার করে, একটা হলো কারবোহাইড্রেট বা শর্করা থেকে আসা গ্লুকোজ এবং চর্বি থেকে আসা কিটোন/বিটাহাইড্রোক্সিবিউটারেট। এই দুইটির মধ্যে ফ্যাট থেকে আসা কিটোন ই হলো শরীরের জন্য বেশি পাওয়ারফুল ফুয়েল, কারণ ১ গ্রাম শর্করা থেকে ৪ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় অন্যদিকে ১ গ্রাম চর্বি থেকে ৯ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় যা দ্বিগুনেরও বেশি। আমরা আমাদের সারাজীবন ভাত/রুটি/ব্রেড/পাস্তা/নুডলস ইত্যাদি শর্করা জাতীয় খাবার খেয়ে এসেছি বলে আমাদের শরীর শর্করা কেই প্রধান জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে।কিটোজেনিক ডায়েটে এই শর্করা বা কারবোহাইড্রেট কে খাবার তালিকা হতে প্রায় পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়া হয় এবং প্রাথমিকভাবে বেশী বেশি ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া হয়। এতে করে শরীরে থাকা গ্লুকোজ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে শরীর বাধ্য হয়ে ফ্যাটকে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। এভাবে কিছুদিন হাই ফ্যাট খাবার খাওয়ার পর শরীর পুরোপুরি ফ্যাট কে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে এবং ডায়েটে শর্করা জাতীয় খাবার নেই তাই শরীরে ইনসুলিনও কম তৈরি হয়। এতে করে শরীর শরীরে জমে থাকা ফ্যাট থেকে চর্বি পুড়িয়ে শক্তি উৎপন্ন করে। আর যখন শরীর পুরোপুরি বডি ফ্যাট থেকে শক্তি নিতে থাকে তখন আর বাইরে থেকে কোন খাবার খাওয়া লাগে না তাই ক্ষুধা কমে যায় কারণ শরীর বডিতে জমে থাকা ফ্যাট থেকে আনলিমিটেড এনার্জি পেয়ে যাচ্ছে। এটাই এই ডায়েটের সবচেয়ে সুন্দর দিক বলে আমি মনে করি, অন্য ডায়েটের মত এই ডায়েটে ক্ষুধায় কষ্ট করা লাগে না, আর সবসময় বডি ফ্যাট বার্ন হয় বলে শরীর দুর্বল ও হয় না এবং ওজন কমে অতিদ্রুত গতিতে। আমি যখন এই ডায়েট ফলো করে ওজন কমিয়েছি তখন মাসে প্রায় ৬-৭ কেজি করে ওজন কমতো।
তো আপনি যদি কিটোজেনিক ডায়েট এর মাধ্যমে ওজন কমাতে চান সেক্ষেত্রে আমার দেওয়া সাজেশন হবে,ডায়েটঃ প্রথম সপ্তাহে আপনাকে যথেষ্ট পরিমান হেলদি ফ্যাট খেতে হবে। হেলদি ফ্যাট এর মাঝে আছে বাটার, ঘি, নারিকেল তেল, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল, খাটি সরিষার তেল। খাবার রান্না করার সময় এই তেলগুলোই ব্যবহার করবেন, কখনো সয়াবিন তেল, সানফ্লাওয়ার ওয়েল, রাইস ব্রান ওয়েল এগুলো ব্যবহার করবেন না।পরিমিত পরিমানে গরু/খাসি/মুরগীর মাংস এবং সব ধরণের মাছ খাবেন। তবে বেশি চর্বি আছে এমন জাতীয় মাংস ও মাছ বেশি ভালো এই ডায়েটের ক্ষেত্রে। দিনে তিনবার খাওয়ার হিসাব করলে প্রতি মিল এ ২০০-২৫০ গ্রাম পর্যন্ত মাছ মাংস খেতে পারবেন। আর মাছ মাংস গুলো রান্না করতে হবে বেশি পরিমানে হেলদি ওয়েল দিয়ে।বেশি পরিমানে তেল দিয়ে স্যুপ রান্না করা খেতে পারেন।বেশি যদি তেল খেতে সমস্যা হয় তবে বাদাম খেতে পারেন। বাদামে অনেক হেলদি ফ্যাট থাকে। তবে দিনে ১০০ গ্রামের বেশি বাদাম খাওয়া ঠিক হবে না।আর মোস্ট ইম্পরট্যান্টলি প্রতিদিন আপনাকে প্রচুর সবুজ শাকসবজি খেতেই হবে। কোনভাবেই শাকসবজি এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। প্রয়োজনীয় ফাইবার এবং ভিটামিন গুলো শুধুমাত্র শাকসবজি থেকেই পাওয়া যায়।খাওয়া যাবে নাঃ ভাত, রুটি, ব্রেড, পাস্তা, নুডলস সহ সকল শর্করা জাতীয় খাবার জাঙ্কফুড ও সব ধরণের মিষ্টি ফল ও সবজি।প্রথম সপ্তাহ এভাবে দিনে ৩ বার খাবেন, ৭-৮ দিন পর থেকে আপনার ক্ষুধা কম হয়ে যাবে। আর তার কিছুদিন পর শরীর যখন বডিতে জমে থাকা ফ্যাট থেকে ফুয়েল নিতে থাকবে তখন আর কোন ক্ষুধা ই থাকবে না! দিনে একবার অল্প মাছ মাংস আর ১/২ টা ডিম খেয়েই স্বাচ্ছন্দ্যে সারাদিন কাটিয়ে দিতে পারবেন। এক্সট্রা কোন ফ্যাট ও খাওয়া লাগবে না তখন। তবে প্রতিদিন শাকসবজিটা খেতেই হবে অবশ্যই!এভাবে ১০ দিন ট্রাই করে দেখুন, ওজন কমার দ্রুততা দেখে নিজেই হতবাক হয়ে যাবেন।
কীভাবে ওজন হ্রাস করবেন? এই ডায়েটের অপশনাল কিছু ভালো দিকঃ
১। আগেই বলেছি শর্করা থেকে চর্বি বেশী শক্তি দেয় তাই শরীরের চর্বি বার্ন করে বেশি এনার্জি পাবেন, কখনোই দুর্বল লাগবে না, ক্ষুধাও লাগবে না।
২। ব্রেইন বেশি পরিষ্কার থাকবে, মেন্টাল ফোকাস বাড়বে
৩। পুরোপুরি ফ্যাট এডাপ্টেড হওয়ার পর সারাদিন একবার খেলেই চলে তাই ফাস্টিং এর বেনিফিট টা পাবেন। অটোফেজির মাধ্যমে আপনার স্কিনের গ্লো বাড়বে, শরীরের ড্যামেজড থাকা সেল গুলো রিপেয়ার হবে। (ইউটিউবে অটোফেজি লিখে সার্চ দিলে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন)
৪। ব্যায়াম করা লাগবে না। এমনিতেই দ্রুত ওজন কমবে।
৫। বডিফ্যাট থেকে শরীর আনলিমিটেড এনার্জি সাপ্লাই পায় তায় মেটাবলিজম স্লো হয়ে যায় না ফলে হারানো ওজন পরে আবার ফিরে আসে না।
৬। টাইপ টু ডায়াবেটিস এর রিভার্স করে।
(ইউটিউবে কিটোজেনিক ডায়েট লিখে সার্চ দিলেই অনেক ভিডিও পাবেন আরো বিস্তারিত)
আর শেষ একটা কথা বলতে চাই যে কখনোই ওজন কমানোর জন্য কম খাবার/কম ক্যালরি খাবেন না। এইটা একটা মারাত্নক ভুল। খাবার কম খেলে শরীর মেটাবলিক রেট কমিয়ে ফেলে এডাপ্ট করার জন্য। সোজা কথায় যত কম খাবেন তত কম শরীর এনার্জি খরচ করবে। ফলে এভাবে কিছু ওজন কমালেও পরে তা আবার ফিরে আসবে ঠিকই।
ওজন কমানোর কার্যকর উপায় আসলে কোনটি?
ওজন কমানোর জন্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তীব্র শরীরচর্চা বা ব্যায়াম অনেক বেশি কার্যকর। এমনটাই দেখা গেছে একটি গবেষণায়। হাই ইনটেনসিভ ইনটারভেল ট্রেনিং বা হিট (Hiit) নামে পরিচিত এই শরীর চর্চার ফলে ওজন কমার হার দীর্ঘ সময়ের ব্যায়ামের তুলনায় বেশি।
ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এই গবেষণাটি ৩৬টি বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়েছে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা এই ‘হিট’ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে তাদের ওজন কমার হার ২৮.৫% বেশী অন্যদের তুলনায়।
তবে গবেষকদের মতে এই পদ্ধতি অবশ্য সবার জন্যে উপযোগী নাও হতে পারে।
কেননা এটির ফলে উচ্চ রক্তচাপসহ আরো কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে।
কীভাবে ওজন হ্রাস করবেন?
গবেষণায় কি উঠে আসছে?
ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব গোইয়াসের একদল গবেষক ৫৭৬ জন পুরুষ ও ৫২২ জন নারীর ফিটনেস ট্রেনিং থেকে নেয়া বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করেন।
ইন্টারভেল ট্রেনিং বা স্বল্প সময়ের ব্যবধান সংক্রান্ত এই ধরনের প্রশিক্ষণকে হৃদযন্ত্রের ব্যায়াম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। যাতে পুনরাবৃত্তিমূলক সংক্ষিপ্ত ব্যবধানে তীব্র শারীরিক কসরত থাকে, আর একেকটি প্রচেষ্টার মধ্যে সময়ের ব্যবধানও কম থাকে। সাইকেল চালনা, সাঁতার, দৌড়ানো এবং বক্সিং বা মুষ্টিযুদ্ধ এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
এইভাবে শরীর চর্চার কর্মপন্থার সাথে তুলনা করা হয় তুলনামূলক দীর্ঘসময়ের ব্যায়ামের। যেগুলো অন্তত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট স্থায়িত্বের ছিল।
যারা এই ইন্টারভেল ট্রেনিং করেছেন তাদের ওজন কমেছে গড়ে ১.৫৮ কেজি, আর যারা দীর্ঘ সময়ের শরীর চর্চার প্রশিক্ষণ করেছেন তাদের গড় ওজন হ্রাস ১.১৩ কেজি।
স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দ্রুত দৌড়ের ইন্টারভেল ট্রেনিং সবচেয়ে বেশী কার্যকর হলেও এতে করে কিছু পর্যবেক্ষণের কথা বলেছেন গবেষকরা।
তবে এনএইচএস প্রতি সপ্তাহে সাইক্লিং বা জোড়ে হাঁটার মতো ১৫০ মিনিটের মাঝারি অ্যারোবিকস এর সুপারিশ করে থাকে।
‘দুর্দান্ত ফলাফল’
স্টিরিং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও ব্যায়াম বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ড. নেইলস ভোলার্ডের মতে ফলাফলগুলি কিছুটা অনির্দিষ্ট ছিল। কেননা বেশিরভাগ মানুষ দীর্ঘ সময়ের ব্যায়ামেই অধিক ক্যালোরি খরচ করে।
“এর দুটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা রয়েছে,” তিনি বলেন।
“প্রথমত, হিট প্রশিক্ষণের পর অধিক পরিমাণে শক্তি ব্যয় হতে পারে, হিট সেশনের পর একদিন পর্যন্ত বিপাক বেড়ে যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত , এই হিট সেশনের পর আপনার ক্ষুধা কমে যেতে পারে।”
মি. ভোলার্ডের মতে, তাদের গবেষণায় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ হরমোনগুলোকে প্রভাবিত হতে দেখা গেছে। তবে এধরনের তীব্র রুটিনের কসরতে দীর্ঘ মেয়াদে কার্যকর হয় কিনা তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
হরাইজন সিরিজের তথ্যচিত্র ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট এক্সারসাইজ’-এ সাত বছর আগে মাইকেল মোজলি এই ‘হিট’ শরীরচর্চার পদ্ধতি সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি বলেন,”২০১২ সালে আমি সপ্তাহে তিনবার এক্সারসাইজ বাইকে বিশ সেকেন্ড করে তীব্র ব্যায়াম করেছি।”
“আর এর ফলে আমার ইনসুলিন সংবেদনশীলতার উন্নতি ঘটেছে ২৪%।”
“এই অনুষ্ঠানে আমরা আবারো দেখেছি যে, তরুণ এবং অনুপযুক্ত মানুষের ক্ষেত্রে খুবই ভালো ফল লাভ হয়েছে।”
তার মতে, সাধারণ ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল শরীর চর্চার পর অতিরিক্ত খাবার অভ্যাস এবং বিশ্রাম নেয়া।
“লোকেরা হয়তো ৩০ মিনিট ট্রেডমিল এ দৌঁড়ালো, ১২০ কিলো ক্যালোরি খরচ করলো আর এরপর নিজেকে খুশি করতে হয়তো মিষ্টি একটা কেক খেল,” এভাবেই বিষয়টার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন মি. মোজলি।
তার মতে, ‘হিট’ পদ্ধতির সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো এটি ক্ষুধাকে দমন করে।
তিনি মনে করেন, কতটা ক্যালরি কমানো গেল সেটি মূল বিষয় নয়- মূল ব্যাপার হলো এরপর কি করা হলো।
কীভাবে ওজন হ্রাস করবেন? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো কিছুটা এখানে পেয়েছেন কিন্তু মূল বিষয়টা আপনার চেষ্টা এবং এগাগ্রতার উপর নির্ভর করব। আপনার চেষ্টা থাকলে ওজন কমানো খুব কঠিন বিষয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।