জুমবাংলা ডেস্ক : ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায়। আর এ বিদ্যুৎ ভারতের মধ্য দিয়ে আনতে হবে। তাই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করছি।’
তিনি বলেন, সেখানে ভুটানের ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ নেপাল থেকেও জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, শুভেচ্ছা স্বরুপ বাংলাদেশ থিম্পুতে একটি বার্ন ইউনিট নির্মাণ করবে, যা দেশের সক্ষমতারও বহিঃপ্রকাশ। এ সময় তিনি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সফর সম্পর্কেও জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সময় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত আরও একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হবে।
১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার ই ধারাবাহিকতায় চার দিনের সফরে ভুটানের রাজার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভুটানের রানী সোমবার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভুটানের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে রাজার। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি গান স্যালুট ও গার্ড অব অনার দিয়ে বাদশাহকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন তিনি।
সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন ভুটানের রাজা। তারা দুজনের মধ্যে বৈঠক হবে। বৈঠকের পর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে রাজার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার রাজা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটও পরিদর্শন করবেন রাজা।
তিনি বঙ্গভবনে যাবেন, সেখানে রাষ্ট্রপতি ও ফার্স্ট লেডি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজা। রাষ্ট্রপতি সফররত রাজপরিবারের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
বুধবার সকালে রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুক ও ভুটানের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানাবেন। ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার রাজা কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। একই দিন বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে আসামের গোলকগঞ্জের উদ্দেশে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ত্যাগ করবেন। সেখানে তাকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক চিঠিতে বলেন, তার গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বিরাজের পাশাপাশি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি ভুটানকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতির বার্তা পাঠান। এর মধ্যে দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটান।
সেই থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এর ফলে ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।