গোপাল হালদার, পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নির্মাণাধীন একটি হোটেল ‘সান মেরিনা’। এ হোটেলের অংশীদার হিসেবে পরিচয় দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাসহ পিএসসির ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে সৈয়দ আবেদ আলীকে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার থেকে এ হোটেল নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মে মাসের ১৮ তারিখ আবেদ আলী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে কুয়াকাটায় তার মালিকানাধীন সান মেরিনা নামের আবাসিক হোটেল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন এমন একটি স্ট্যাটাস দেন।ইতিমধ্যে তার স্ট্যাটাস টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সেখানে তিনি লিখেন,‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পারে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একই সাথে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’
এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে হোটেল সান মেরিনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিনে কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ৪০ শতাংশ জায়গার উপর টিনসেট ২ টি ছোট ভবনে মাত্র ৬ টি রুম দিয়ে চলছে হোটেল সানমেরিনার কার্যক্রম ।সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা রয়েছে চারপাশ।ভিতরে বহুতল কোনো ভবনের নির্মাণকাজ এখনো শুরু হয়নি।
হোটেলের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন, আমি বিগত ৮ বছর ধরে এখানে চাকরি করছি।আবেদ আলী নামে আমাদের কোনো মালিক নেই। গত ৩/৪ মাস আগে তিনি একদিন আমাদের হোটেলে এসে শেয়ার কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলে আমি তাঁকে ঢাকা হেড অফিসে যোগাযোগ করতে বলি।
আবেদ আলীর ভাইরাল হওয়া স্ট্যাটাস নিয়ে হোটেল সান মেরিনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি আবেদ আলী নামের এই লোককে চিনি না, তারসাথে আমার কখনো দেখা হয়নি। আমি সান মেরিনা হোটেলের মালিক, ২০১০ সালে ৪০ শতাংশ জায়গা আমি কিনি এবং ব্যাংক লোন এর জন্য চেষ্টা করছিলাম।বেশ কয়েক মাস আগে হোটেলের শেয়ার বিক্রি করবো এ জন্য একটি সাইনবোর্ড দিয়েছিলাম।আবেদ আলী সেই সাইনবোর্ড এর ছবি ফেসবুকে দিয়ে মালিক দাবি কেন করেছেন সে বিষয় আমি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আমার ম্যানেজারের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ৩/৪ মাস আগে আবেদ আলী হোটেলের শেয়ার কেনার বিষয়ে কুয়াকাটা অফিসে যোগাযোগ করেছিলেন। শেয়ার কিনতে এসে তিনি নিজেকে মালিক বলে ফেসবুকে পরিচয় দিয়েছেন।
ইতোমধ্যে হোটেল সান মেরিনা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন সান মেরিনা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াতে চান না দেখেই আবেদ আলীর মালিকানা অস্বীকার করছেন বা গোপন রাখার চেষ্টা করছেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম সদস্য সৈয়দ আবেদ আলী সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বোতলা গ্রামের মৃত আবদুর রহমান মীরের ছেলে। ঢাকায় তার ৭ তলা এবং ১১ তলা বিশিষ্ট দুটি বাড়ি রয়েছে। ৭১ শতক জমিতে মসজিদ এবং ঈদগাহ করেছেন তিনি। নিজ এলাকায় বাড়ি করেছেন প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ করে। মাদারিপুরের ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছেন আবেদ আলী।
৮ জুলাই সৈয়দ আবেদ আলী সহ প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।