জুমবাংলা ডেস্ক : বাইরে সবুজ, ভেতরটা লাল। এরকম তেঁতুলের গাছ রয়েছে কুষ্টিয়ার খোকসায় হিজলাবট গ্রামে। তেঁতুল হাতে পেলেই সবাই প্রথমেই ভেঙে দেখেন কতটা লাল।
স্থানীয়রা জানান, একই আকৃতির তেঁতুল গাছ তিনটি বেশ প্রাচীন। এই তেঁতুল গাছের সঙ্গে বৃটিশদের নীলকর, ৪৭’র দেশভাগের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। গড়াই নদী পাড়ের এই তেঁতুল গাছ তিনটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তিনটি গাছ যেমন দেখতে একই রকম, বাইরে থেকে দেখতে এর তেঁতুলও একই রকম সবুজ। কিন্তু একটির তেঁতুলের ভেতরটা রক্তরঙা লাল। ভাঙলে সহজেই বোঝা যায়। অপর একটির তেঁতুলের ভেতরটা কিছুটা লাল, অন্যটি স্বাভাবিক। প্রায় সারাবছরই এসব গাছে থোকায় থোকায় তেঁতুল ধরে থাকে।
শিশু কিশোররা তেঁতুল পাড়তে প্রতিদিনই গাছে ওঠে। কেউ কেউ ঘরের টিনের চালার ওপরে উঠে লগি দিয়ে তেঁতুল পাড়েন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপর থেকে পড়েই তেঁতুল ভেঙে যায়। বেরিয়ে আসে লাল রঙ। যারা কুঁড়িয়ে তোলেন তারা সবাই প্রথমেই তেঁতুল ভেঙে দেখেন কতটা লাল।
খোকসা উপজেলার হিজলাবট গ্রামের তেঁতুল গাছগুলো নিয়ে রয়েছে নানান গল্প। কেউ বলেন অন্তত দেড়শ বছর বয়স হবে গাছগুলোর, কেউ মনে করেন দুইশ’ বছরেরও বেশি হবে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি মুন্সী মোকাররম হোসেন ঝান্টু বলেন, এই হিজলাবট এলাকা এক সময় জনশূন্য ছিলো। আর বসতি ছিলো গড়াই নদীর পাড়ে। নদী ভাঙতে ভাঙতে সরে এসেছে। এখন এখানে বসতি হয়েছে। এই এলাকায় ব্রিটিশ আমলে নীল চাষ হতো।
তেঁতুল গাছের জমি লিজ নেওয়া পারভেজ উল আলম রাজন বলেন, তেঁতুল গাছ সবার জন্য উন্মুক্ত। তেঁতুল গাছ, নীল কুঠির অফিস ও গড়াই নদীর পাড় এগুলোকে কেন্দ্র করে হিজলাবটে পর্যটন কেন্দ্র করারও দাবি জানান তিনি।
ওসমানপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য জাহানারা বেগম বলেন, উদ্যোগ সরকারি হোক আর বেসরকারি হোক তেঁতুল গাছ সংরক্ষণ করতে হবে।
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক আহসান কবীর রানা জানান, প্রজননের সময় ক্রোমজমের বিন্যাসে ক্রসিং ওভার হওয়ায় নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই তেঁতুল গাছের ক্ষেত্রেও এটা হয়ে থাকতে পারে। অনেক সময় নতুন বৈশিষ্ট্য টেকসই হয় আবার বিলুপ্তও হয়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।