জুমবাংলা ডেস্ক : কনকনে শীতের মধ্যেও নবজাতক এক ছেলেশিশুকে কোনো কাপড়চোপড় পেঁচানো ছাড়াই রাস্তার পাশের গর্তে ফেলে রেখে যায় কে বা কারা। স্থানীয় একজন মুরব্বি সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে তুলে দিয়েছেন তার দুই ছেলেবউয়ের কোলে। শিশুটিকে দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন ওই বাড়িতে।
আজ শনিবার ভোরে শিশুটিকে পাওয়া যায় জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের আরএমপাড়া এলাকায়।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, পিংনা ইউনিয়নের আরএমপাড়া গ্রামের সেই মুরুব্বির নাম হাজি মো. আবুল হোসেন। তিনি শনিবার ভোরে স্থানীয় মসজিদে ফজরের নাম শেষে অন্যান্য মুসল্লিদের সাথে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে তারা তারাকান্দি-ভুয়াপুর পাকা রাস্তার পাশে একটি গাছের গোড়ায় গর্তে ফুটফুটে নবজাতক একটি ছেলেশিশু পড়ে থাকতে দেখেন। কনকনে শীতের মধ্যেও তার গায়ে কোনো কাপড় পেঁচানো ছিল না। শিশুটির ওপর গাছের পাতাও জমে গেছে। পরে হাজি আবুল হোসেন পাশের বাড়ি থেকে একটি কাপড় এনে শিশুটিকে পেঁচিয়ে দ্রুত তার বাড়িতে নিয়ে যান।
হাজি আবুল হোসেন বলেন, ‘শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর বাড়ির নারীরা সবাই শিশুটিকে বাঁচাতে প্রচেষ্টা চালায়। পরিয়ে দেয় নতুন জামা কাপড়। শিশুটিকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার হাত থেকে রক্ষা করতে যা যা করা দরকার তারা সবই করছে শিশুটির জন্য। আমার ছেলে জলিলের স্ত্রী পূর্ণিমা শিশুটিকে লালন পালনের দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো শিশুটি বুকের দুধ খাওয়াবে কে। আমার আরেক ছেলে খলিলের স্ত্রী মিতুর আড়াই মাসের এক ছেলে শিশু রয়েছে। গৃহবধূ মিতু রাজি হয়ে যায় কুড়িয়ে পাওয়া এই শিশুটিকে সেই তার বুকের দুধ খাওয়াবে। শিশুটির স্থান হয়েছে এখন দুই ছেলেবউয়ের কোলে।
হাজি আবুল হোসেন আরো বলেন, ‘যারাই এই কনকনে শীতের মধ্যে খালি গায়ে এই শিশুটিকে এভাবে রাস্তার পাশে গর্তে ফেলে রেখে গেছে, তারা কাজটি ঠিক করেনি। এটি একটি নিষ্পাপ শিশু। শিশুদের কোনো অপরাধ নেই। আমার কাছে মনে হলো তাকে বাঁচানো দরকার। তাই আমি শিশুটিকে সেখান থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যাই। শিশুটিকে যমুনা সার কারখানার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে ডাক্তারও দেখিয়েছি। ডাক্তার বলেছেন শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। শিশুটির উপযুক্ত দাবিদার না পাওয়া গেলে আমার বাড়িতেই শিশুটিকে লালন পালন করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।